শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় মক্কা নগরীর মর্যাদা।

আরব উপদ্বীপের পশ্চিমে পবিত্র নগরী মক্কা অবস্থিত রয়েছে। এই পবিত্র নগরী মক্কায় ‎মাসজিদুল হারাম রয়েছে। এই পবিত্র মাসজিদুল হারাম পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ঘর। ‎প্রকৃত ইসলাম ধর্মে এই পবিত্র নগরী মক্কা এবং এই মাসজিদুল হারামের মহা মর্যাদা ‎রয়েছে। এই অনুচ্ছেদে আপনি এই সমস্ত বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

  • পবিত্র শহর মক্কার মর্যাদার জ্ঞান লাভ করা।
  • মাসজিদুল হারামের মর্যাদার জ্ঞান লাভ করা।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

আরব উপদ্বীপের পশ্চিমে পবিত্র নগরী মক্কায় মাসজিদুল হারাম অবস্থিত। প্রকৃত ইসলাম ধর্মে এই মাসজিদুল হারামের অনেক মর্যাদার বিষয় আলোচিত হয়েছে। সেই সমস্ত মর্যাদার বিষয়ের মধ্যে রয়েছে:

১। পবিত্র শহর মক্কা হলো প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ও তদীয় ‎বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর নিকটে ‎সবচেয়ে বেশি প্রিয় স্থান।

আব্দুল্লাহ বিন আদী বিন হামরা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি আল্লাহর ‎বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে ‎হাজওয়ারায় দাঁড়ানো অবস্থায় দেখেছি, তিনি বলেছেন: “হে মক্কা! আল্লাহর ‎কসম! তুমি আল্লাহর সর্বোত্তম জমিন এবং আল্লাহর নিকটে আল্লাহর ‎জমিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রিয় জমিন। যদি আমি তোমার কাছ থেকে ‎বিতাড়িত না হতাম, তাহলে তোমাকে ছেড়ে কক্ষনো অন্যত্র বের হতাম ‎না”। ‎(তিরমিযী 3925), (ইবনে মাজাহ 3108)। এবং অন্য একটি বর্ণনায় ‎এসেছে: “আমার কাছে আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় ভূমি”।

২।পবিত্র শহর মক্কা হলো প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর মহা ‎সম্মানিত স্থান। ‎

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ পবিত্র মক্কায় রক্তপাত করা, কোনো ব্যক্তির ‎প্রতি অত্যাচার করা এবং শিকার করা বা কোনো গাছ ও আগাছা কেটে ফেলা হারাম ‎করে দিয়েছেন। তাই যেহেতু মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(إِنَّمَا أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ رَبَّ هَذِهِ الْبَلْدَةِ الَّذِي حَرَّمَهَا وَلَهُ كُلُّ شَيْءٍ وَأُمِرْتُ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْمُسْلِمِين) ‏‏(النمل: 91).‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “হে বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ! অমুসলিমদেরকে বলো: আমি ‎তো কেবল এই পবিত্র মক্কা শহরের সেই প্রভুর ইবাদত বা উপাসনা করার প্রতি ‎আদিষ্ট হয়েছি, যিনি এই নগরীকে হারাম ও সম্মানিত করেছেন। আর তিনি সব ‎জগতের ও সমস্ত বস্তুর প্রকৃত প্রভু। এবং আমি প্রকৃত ইমানদার একত্ববাদী মুসলিম ও ‎তাঁর আনুগত্যকারী হওয়ার প্রতি আদিষ্ট হয়েছি”। (সূরা নামাল: ৯১)‎

আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: ‎‎“পবিত্র মক্কা শহরকে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ হারাম ও সম্মানিত ‎করেছেন। মানব সমাজ তাকে হারাম ও সম্মানিত করেনি। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহর ‎প্রতি এবং পরকালের শেষ দিবসের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস রাখে তার জন্য সেখানে ‎রক্তপাত করা এবং সেখানকার কোনো গাছপালা কাটা হালাল বা বৈধ নয়। ‎ ‎(বুখারী 104, মুসলিম 1354)।‎

৩। পবিত্র মক্কা শহর নিজের ভিতরে পবিত্র মাসজিদুল হারাম বা কাবা ঘরকে আগলে ‎রেখেছে। আর এই পবিত্র মাসজিদুল হারাম বা কাবা ঘরের কতকগুলি মর্যাদা রয়েছে। ‎সেই মর্যাদাগুলির অন্তর্ভুক্ত হলো: ‎

১। পৃথিবীতে আল্লাহর উপাসনার জন্য সর্বপ্রথম মাসজিদ হলো মাসজিদুল হারাম বা কাবা ঘর:‎

আবু জার [রাদিয়াল্লাহু আনহু] থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন: আমি জিজ্ঞাসা করলাম: হে আল্লাহর রাসূল! ‎পৃথিবীতে আল্লাহর উপাসনার জন্য সর্বপ্রথম কোন্ মাসজিদটি নির্মিত হয়েছিলো? তিনি বললেন: ‎‎“মাসজিদুল হারাম বা কাবা ঘর”। আমি জিজ্ঞাসা করলাম: অতঃপর কোনটি। তিনি বললেন: “ফিলিস্তিনের ‎জেরুজালেমে অবস্থিত মাসজিদুল আক্বসা”। আমি জিজ্ঞাসা করলাম: এই দিুইটি মাসজিদের মধ্যে কালের ‎ব্যবধান কতটূকু ছিলো? তিনি বললেন: “চল্লিশ বছর”। তবে যেখানেই নামাজের সময় হয়ে যাবে, ‎সেখানেই তুমি নামাজ পড়ে নিবে। সেটিই হলো নামাজ পড়ার মাসজিদ”। ‎ ‎(বুখারি 3366, মুসলিম 520)‎

২। পবিত্র মক্কা শহরে রয়েছে মাসজিদুল হারাম বা সম্মানিত কাবা ঘর:‎

পবিত্র কাবা ঘর হলো একটি চারকোনা আকৃতির সমান্তরাল ঘর। পবিত্র মক্কায় ‎মাসজিদুল হারামের মধ্যস্থলে অবস্থিত এই পবিত্র কাবা ঘর। আর এই পবিত্র কাবা ঘর ‎হলো পূর্ব ও পশ্চিম তথা সারা বিশ্বের মুসলিম জাতির নামাজ পড়ার কিবলা। এই ‎পবিত্র কাবা ঘর প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আদেশে ইবরাহিম আল ‎খালিল এবং তাঁর পুত্র ইসমাইল [আলাইহিমাস সালাম] দ্বারা নির্মিত হয়েছে। তারপর ‎এই পবিত্র কাবা ঘরের কয়েকবার পুনর্নির্মাণ হয়েছে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র ‎কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَاهِيمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَيْتِ وَإِسْمَاعِيلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيم) (البقرة: 127).‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “স্মরণ করো ওই সময়কে! যখন ইবরাহিম এবং ইসমাইল কাবা ‎ঘরের ভিত্তি স্থাপন করছিলো। তারা এই বলে দোয়া করছিলো: হে আমাদের ‎প্রতিপালক! আপনি আমাদের এই কর্মটি কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি শ্রবণকারী, ‎সর্বজ্ঞ”। (সূরা বাকারা : 127)। কুরাইশ বংশের লেকেরা যখন এই পবিত্র কাবা ঘরের পুনর্নির্মাণ করছিলেন, তখন ‎তারা হাজরে আসওয়াদ তার ঠিক জায়গায় স্থাপন করার সময় আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল ‎বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি সন্তুষ্ট ছিলো। সুতরাং ‎তিনিই হাজরে আসওয়াদ তার ঠিক জায়গায় স্থাপন করেছিলেন। ‎

৩। পবিত্র কাবা ঘরে নামাজ পড়ার পুণ্য বহুগুণ বেশি

আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ‎বলেছেন: “মাসজিদুল হারাম ব্যতীত, আমার এই মাসজিদের একটি নামাজ ‎অন্যান্য মাসজিদের এক হাজার নামাজের চেয়েও বেশি উত্তম। আর ‎মাসজিদুল হারামের একটি নামাজ অন্যান্য মাসজিদের এক লক্ষ নামাজের ‎চেয়েও বেশি উত্তম”। (ইবনে মাজাহ 1406, আহমদ 14694)।

৪। যে ব্যক্তি হজ্জ পালন করার ক্ষমতা রাখে, সে ব্যক্তির জন্য মহান আল্লাহ কাবা ‎ঘরের হজ্জ পালন করা ফরজ বা অনিবার্য করে দিয়েছেন: ‎

ইবরাহিম [আলাইহিস সালাম] মানব জাতির জন্য ঘোষণা করে দিয়েছেন: তারা যেন ‎হজ্জ করে। তাই লোকেরা কাবা ঘরের হজ্জ পালন করার জন্য সব দিক থেকে এসেছে ‎এবং নাবীগণ [আলাইহিমুস সালাম] ও সেই কাবা ঘরের হজ্জ পালন করেছেন। ‎যেমনভাবে আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ‎জানিয়ে দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏‌(وَأَذِّن ‌فِي ‌ٱلنَّاسِ بِٱلۡحَجِّ يَأۡتُوكَ رِجَالٗا وَعَلَىٰ كُلِّ ضَامِرٖ يَأۡتِينَ مِن كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٖ) ‏‏(الحج:27).‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “ অতএব হে নাবী ইবরাহিম! তুমি মানুষের কাছে হজ্জ পালন করার ‎ঘোষণা দাও। তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং কৃশকায় উটের পিঠে চড়ে ‎দূরদূরান্ত থেকে”। ‎ ‎(সূরা হজ্জ: ২৭)।

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন