শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় ক্রয়বিক্রয়

এই অনুচ্ছেদে আমরা ক্রয়বিক্রয়ের অর্থ ও তার বিধিবিধান প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা ‎মোতাকে জানতে পারবো। ‎

  • ক্রয়বিক্রয়ের বিধিবিধান জানা।
  • ক্রয়বিক্রয়ের বৈধতার তাৎপর্য জানা।
  • ক্রয়বিক্রয়ের শর্তাবলি জানা।
  • অবৈধ ক্রয়বিক্রয়ের আসল উৎস উপস্থাপন করা; তাতে থেকে দূরীভূত হওয়ার জন্য।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

ক্রয়বিক্রয়ের সংজ্ঞা

ক্রয়বিক্রয় এর আভিধানিক অর্থ হলো: কোনো কিছুর বদলে কোনো কিছু বিনিময় করা। ক্রয়বিক্রয় এর পারিভাষিক অর্থ হলো: মালের বদলে মাল বিনিময় করে মালিক হওয়া ‎ও মালিকানা প্রদান করা।

ক্রয়বিক্রয় এর বিধান ‎

পবিত্র কুরআন এবং হাদীস ও সমস্ত আলেম বা বিদ্বানের সর্বসম্মতিক্রমে ক্রয়বিক্রয় ‎হলো একটি বৈধ চুক্তি। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ)، سورة البقرة، جزء من الآية 275.‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “আল্লাহ ক্রয়বিক্রয় বা ব্যবসাকে বৈধ করেছেন এবং সুদকে হারাম ‎করেছেন”। ‎(সূরা আল বাকারা, আয়াত নং 275 এর অংশবিশেষ)।

ক্রয়বিক্রয় বা ব্যবসা বৈধ হওয়ার তাৎপর্য।

১। একজন লোক অন্য আরেক জন লেকের খাদ্যদ্রব্য, পানীয় দ্রব্য, বস্ত্র ও বাসস্থান ‎ইত্যাদির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। আর এই সমস্ত জিনিসের মালিক বিনিময় ব্যতীত কিছু ‎প্রদান করবে না। তাই ক্রয়বিক্রয়ের মাধ্যমে এই সমস্ত জিনিস অর্জন করা সম্ভব হয়। ‎খরিদ্দার বা ক্রেতা ক্রয়মূল্য প্রদান করে আর বিক্রেতা বা বিক্রয়কারী বিক্রয়মূল্য বা ‎পণ্যদ্রব্য প্রদান করে।

২। সম্ভাব্য সর্বোত্তম উপায়ে মানুষের জীবন রক্ষা করা। যেহেতু মানুষ তার প্রয়োজনীয় ‎জিনিস ক্রয় করা ব্যতীত অর্জন করতে পারে না।

২। চুরি করা, বলপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়া এবং জালিয়াতি করা ইত্যাদি অপকর্ম সমাজকে ‎কলুষিত ‎করে। তাই মানুষ তার প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করার মাধ্যমে অর্জন করে। ‎

ক্রয়বিক্রয়ের স্তম্ভসমূহ:‎

١
বিক্রেতা বা বিক্রয়কারী: তিনি পণ্যের মালিক।
٢
খরিদ্দার বা ক্রেতা: তিনি দামের মালিক। ‎
٣
ক্রয়বিক্রয়ের পারস্পরিক স্বেচ্ছাসম্মতির ভিত্তিতে কথাবার্তা: এটি বিক্রেতা বা ‎বিক্রয়কারীর পক্ষ থেকে বিক্রয়ের উপস্থাপন করা এবং খরিদ্দার বা ক্রেতার ‎পক্ষ থেকে ক্রয়ের সম্মতি প্রদান করা। সমাজের প্রথা মোতাবেক ক্রয়বিক্রয়ের ‎কথাবার্তার পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে। ‎
٤
ক্রয়বিক্রয়ের জিনিস বা দ্রব্যের বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হওয়া: আর এই বিষয়টির ‎সম্পর্ক রয়েছে মূল্যের সাথে এবং পণ্যের সাথে।

দুই ক্রয়বিক্রয়কারীর শর্তাবলি

١
ক্রয়বিক্রয়কারীরা যেন বুদ্ধিমান বা জ্ঞানসম্পন্ন হয়: সুতরাং পাগল বা মাতাল ‎ব্যক্তির ক্রয়বিক্রয় সঠিক বলে বিবেচিত হবে না।
٢
ক্রয়বিক্রয়কারীরা যেন সাবালক বা প্রাপ্তবয়স্ক হয়। তবে কোনো বিচক্ষ ‎নাবালকের ক্রয়বিক্রয় সঠিক ও বৈধ বলে বিবেচিত হবে। আর স্বাভাবিক ও ‎সাধারণ নাবালকের দ্বারা ছোটোখাটো বা অল্প জিনিসের ক্রয়বিক্রয় সঠিক ও বৈধ ‎বলে বিবেচিত হবে। আর বেশি মুল্যবান সামগ্রি যদি কোনো বিচক্ষ নাবালকের ‎মাধ্যমে ক্রয়বিক্রয় করা হয় এবং তাতে তার অভিভাবক ও তত্ত্বাবধায়কের ‎সম্মতি থাকে, তাহলে সেই ক্রয়বিক্রয় সঠিক ও বৈধ বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু ‎স্বাভাবিক ও সাধারণ নাবালকের দ্বারা বেশি মুল্যবান সামগ্রির ক্রয়বিক্রয় সঠিক ‎ও বৈধ বলে বিবেচিত হবে না।
٣
কার্যসাধনে ও ক্রয়বিক্রয়ে সামর্থ্যসম্পন্ন বা ক্ষমতাবান হওয়া: সুতরাং যে ব্যক্তিকে ‎তার অযোগ্যতা বা নির্বুদ্ধিতা ও বোকামির কারণে কার্যসাধনে বা ক্রয়বিক্রয়ে ‎বাধা দেওয়া হয়েছে, তার দ্বারা ক্রয়বিক্রয় সঠিক ও বৈধ বলে বিবেচিত হবে ‎না। ‎
٤
ক্রয়বিক্রয়কারীরা যেন সন্তুষ্ট ও স্বাধীন হয়: অতএব অন্যায়ভাবে জোর করে ‎ক্রয়বিক্রয় করা সঠিক নয়। আর রসিকতা বা ফাজলামি ও ইয়ারকির মাধ্যমে ‎ক্রয়বিক্রয় করাও বৈধ নয়। এবং বলপূর্বক জবরদস্তির মাধ্যমে ক্রয়বিক্রয় করাও ‎জায়েজ নয়। যেমন:- দুই ক্রয়বিক্রয়কারী কোনো জিনিস আন্তরিকতার সহিত ‎ক্রয়বিক্রয় করতে চায় না। কিন্তু কোনো অত্যাচারীর ভয়ে ও তার জুলুম থেকে ‎রক্ষা লাভের আশায় ক্রয়বিক্রয় করার ইচ্ছা করে। এই ধরণের ক্রয়বিক্রয় করা ‎বৈধ নয়।
٥
বিক্রেতা বা বিক্রয়কারী যেন তার বিক্রীত পণ্য খরিদ্দার বা ক্রেতাকে অর্পণ ‎করার ক্ষমতা রাখে: তাই যে বিক্রেতা বা বিক্রয়কারী তার বিক্রীত পণ্য খরিদ্দার ‎বা ক্রেতাকে অর্পণ করার ক্ষমতা রাখবে না, তার বিক্রয় করা বৈধ হবে না। ‎

চুক্তিকৃত বিষয়ের (দ্রব্য ও তার মূল্যের) শর্তাবলি

١
মূল্য নির্ধারণ করা এবং বিক্রীত পণ্যের মধ্যে পার্থক্য করা: যেহেতু বিক্রয় কোনো ‎‎কোনো সময়ে পণ্যের বিনিময়ে পণ্য হয়ে থাকে এবং কোনো কোনো সময়ে পণ্যের ‎‎বিনিময়ে মুদ্রা হয়ে থাকে আবার কোনো কোনো সময়ে মুদ্রার ‎বিনিময়ে মুদ্রাও হয়ে ‎থাকে। তাই ক্রয়বিক্রয়ের সময় পণ্য ও তার মূল্যের মধ্যে পার্থক্য করার শর্ত থাকবে ‎এবং যা নির্দিষ্ট করার দরকার হবে তা স্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করতে হবে। ‎
٢
বিক্রীত পণ্য বিদ্যমান ও মজুত বা জমা থাকা: অতএব ক্রয়বিক্রয়ের সময়ে যে পণ্য ‎বিদ্যমান ও মজুত বা জমা থাকবে না, সে পণ্য বিক্রয় করা জায়েজ হবে না। ‎
٣
বিক্রীত পণ্য যেন বৈধ জিনিস হয়: সুতরাং মদ বা মাদকদ্রব্য বিক্রয় করা কিংবা ‎শুয়োরের বা শূকরের মাংস বিক্রয় করা অথবা বাদ্যযন্ত্র ও অন্যান্য নিষিদ্ধ জিনিস বিক্রয় ‎করা জায়েজ নয়। ‎
٤
বিক্রীত পণ্য যেন পবিত্র জিনিস হয়: সুতরাং অপবিত্র বা নাপাক জিনিস বিক্রয় করা ‎জায়েজ নয়। এবং যে সমস্ত নোংরা জিনিস পবিত্র করা সম্ভব নয়, সে সমস্ত নোংরা ‎জিনিসও বিক্রয় করা বৈধ নয়।
٥
বিক্রীত পণ্য যেন আয়ত্ত করা বা অর্জন করা সম্ভব হয়: সুতরাং আকাশের কোনো পাখি ‎বা কোনো চুরি করা বস্তু এবং এই ধরণের অন্য কোনো জিনিস বিক্রয় করা বৈধ নয়।
٦
বিক্রেতা বা বিক্রয়কারী যেন বিক্রীত পণ্যের মালিক হয়: অতএব বিক্রয়কারী যে ‎জিনিসের মালিক নয়, সেই জিনিসটি তার জন্য বিক্রয় করা বৈধ নয়। তবে সেই ‎জিনিসটির আসল মালিক যদি তাকে বিক্রয় করার অনুমতি প্রদান করে, তাহলে সে ‎সেই জিনিসটি বিক্রয় করতে পারবে। ‎

কতকগুলি নিষিদ্ধ বা অবৈধ ক্রয়বিক্রয়:‎

١
প্রতারণামূলক ও অনিশ্চিত বস্তুর ক্রয়বিক্রয়; আর তা হলো এই যে, যে ক্রয়বিক্রয়ে দুই ‎ক্রয়বিক্রয়কারীর মধ্যে থেকে এক পক্ষ বা এক জন বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং তার ‎মাল নষ্ট হয়ে যায়। যেমন:- এমন কিছু জিনিস বিক্রি করা হয় যে, সেই জিনিসের ‎অস্তিত্ব আছে কী না, তা জানা যায় না। অথবা সেই জিনিসের আসল পরিমাণ কম কী ‎বেশি, তা জানা যায় না। কিংবা এমন জিনিস বিক্রি করা যে, সেই জিনিসটি অর্পণ করা ‎যায় না। ‎
٢
যে সমস্ত ক্রয়বিক্রয়ে ধোঁকা দেওয়া হয় বা ক্ষতি করা হয়।
٣
যে সমস্ত ক্রয়বিক্রয়ে সুদ লেনদেন করা হয়।
٤
হারাম বা অবৈধ জিনিসের ক্রয়বিক্রয়, যেমন:- মৃতু পশুর মাংস বিক্রয় করা, মদ বা ‎মাদকদ্রব্য বিক্রয় করা কিংবা শুয়োরের বা শূকরের মাংস বিক্রয় করা। ‎
٥
অন্য কারণে নিষিদ্ধ ক্রয়বিক্রয়: যেমন:- শুক্রবারের দ্বিতীয় আজানের সময় কোনো ‎জিনিস বিক্রয় করা এবং হারাম কাজের উদ্দেশ্যে কোনো জিনিস বিক্রয় করা, যেমন:- ‎মদ তৈরি করার জন্য আঙ্গুর বিক্রয় করা। কিংবা অন্যায় ভাবে হত্যা করার জন্য ‎তরবারি বা তলোয়ার বিক্রয় করা।

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন