শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় পবিত্র‎‏‎ ‎রমাজান মাসের রোজা ‎

প্রকৃত ইসলাম ধর্মে রমাজান মাসের রোজা হলো চতুর্থ ‎স্তম্ভ। ‎ এই অনুচ্ছেদে আমরা রোজার অর্থ ও মর্যাদা এবং ‎পবিত্র‎‏‎ ‎রমাজান মাসের মর্যাদার জ্ঞান লাভ করতে পারবো।

  • রোজার অর্থ ও মর্যাদার জ্ঞান লাভ করা।
  • পবিত্র ‎‏‎‎রমাজান মাসের মর্যাদার জ্ঞান লাভ করা।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

মহান আল্লাহ মুসলিম জাতির প্রতি বছরে এক মাস রোজা রাখা ফরজ বা অবশ্য করণীয় কাজ হিসেবে নির্ধারিত করে দিয়েছেন। আর সেই মাসটি হলো পবিত্র রমাজান মাস। এবং এই পবিত্র রমাজান মাসে রোজা রাখা প্রকৃত ইসলাম ধর্মের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে এবং অতি গুরুত্বপুর্ণ ইবাদত বা উপাসনা হিসেবে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তাই এই বিষয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ)، سورة البقرة، الآية 183. ভাবার্থের অনুবাদ: “হে প্রকৃত ঈমানদার মুসলিম সমাজ!! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যাতে তোমরা রোজার অবস্থায় পানাহার, পাপাচার ও যৌন সম্ভোগ হতে বিরত থাকার মাধ্যমে মহান আল্লাহর অনুগত মানুষ হতে পারো”। (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ১৮৩)।

প্রকৃত ইসলাম ধর্মে রোজার অর্থ

প্রকৃত ইসলাম ধর্মে রোজার অর্থ: ভোরের আভা প্রকাশ হওয়া থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত ‎পর্যন্ত মহান আল্লাহর উপাসনার লক্ষ্যে ও তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পানাহার, যৌন ‎সম্ভোগ ও রোজা বিনষ্টকারী বস্তু থেকে বিরত থাকার নাম রোজা।

• পবিত্র‎‏‎ ‎রমাজান মাসের মর্যাদা

পবিত্র‎‏‎ ‎রমাজান মাস হলো ইসলামিক হিজরি ক্যালেন্ডার হিসেবে চান্দ্রমাসের নবম মাস। ‎সারা বছরের মধ্যে এই মাসটি হলো সর্বোত্তম মাস। মহান আল্লাহ অন্যান্য মাসের ‎তুলনায় এই মাসের অনেক মর্যাদা নির্ধারিত করেছেন। সেই সব মর্যাদার মধ্যে রয়েছে:‎

১। রমাজান মাস হলো সেই মহা সম্মানিত মাস, যেই মাসে মহান আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ ‎গ্রন্থ পবিত্র‎‏‎ কুরআন অবতীর্ণ করেছেন।

মহান আল্লাহ পবিত্র‎‏‎ কুরআনরে মধ্যে বলছেনে:‎ ‏(شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدىً لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ)، ‏سورة البقرة، جزء من الآية ‏‏185.‏‎ ‎‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “রমাজান মাস হলো সেই মাস, যেই ‎মাসে সকল জাতির মানব ‎সমাজরে জন্য ‎প্রকৃত ইসলাম ‎ধর্মের দিক প্রদর্শনকারী পবিত্র‎‏‎ কুরআন অবর্তীণ ‎করা ‎হয়েছে। আর পবিত্র‎‏‎ কুরআন হলো ‎সুখময় ও ‎আনন্দময় জীবন লাভের পথপ্রর্দশক ‎এবং ন্যায়-অন্যায়, ‎ভালোমন্দ ও সত্য মথ্যিা নির্ধারণের ‎মুক্ত মানদণ্ড। সুতরাং ‎তোমাদের মধ্যে থেকে যে ব্যক্তি পবিত্র রমাজান মাস পেয়ে যাবে, ‎সে ব্যক্তি সেই মাসে রোজা পালন করবে”। (সূরা ‎আল ‎বাকারা, আয়াত নং ১৮৫ এর অংশবিশেষ)।‎

২। রমাজান মাস হলো সেই মহা সম্মানিত মাস, যেই মাসে জান্নাতের দরজাগুলি খুলে ‎দেওয়া হয়।

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "إِذَا دَخَلَ رَمَضَانُ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ، وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ، ‏وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِيْنُ". ‏ ‏(صحيح البخاري، رقم الحديث 3277، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 1 - ‏‏(1079)،). ‏‎ ‎ অর্থ: আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ‎বলেছেন: “যখন রমাজান মাসের আগমন ঘটে, তখন জান্নাতের দরজাগুলি খুলে দেওয়া ‎হয়, জাহান্নামের দরজাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা ‎হয়”। ‎[সহীহ বুখারী, হাদীস নং 3277 এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 1 -(1079), তবে ‎হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]। এই মহা সম্মানিত রমাজান মাসকে মহান আল্লাহ প্রস্তুত করেছেন সমস্ত মানুষের ‎কল্যাণের জন্য সুতরাং তারা যেন তাঁর উপাসনা ও আনুগত্য করে সৎ কাজের মাধ্যমে ‎এবং অসৎ কাজ বর্জনের মাধ্যমে। ‎

৩। যে ব্যক্তি রমাজান মাসের দিনে রোজা রাখবে এবং রাতে জেগে নামাজ পড়বে ও ‎সৎ কর্ম করবে, তার পূর্বের সমস্ত ছোটো ছোটো পাপকে মাফ করে দেওয়া হবে।

قَالَ النبي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ‎ ‎‏:‏‎ ‎‏"مَن صَامَ رَمْضَانَ إِيْمَانًا وَاحْتِسَابًا؛ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ".‏ ‏(صحيح البخاري, رقم الحديث 2014, وصحيح مسلم, رقم الحديث 175 - (760),).‏ অর্থ: আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ‎বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত এবং পুণ্য লাভের আশায় রমাজান মাসে রোজা ‎রাখবে, সে ব্যক্তির অতীতের সমস্ত ছোটো ছোটো পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। ‎ ‎[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৪ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭৫ -(৭৬০] । وقال: "من قام رمضان إيمانًا واحتسابًا غفر له ما تقدم من ذنبه".‏ ‏(صحيح البخاري, رقم الحديث 2009, وصحيح مسلم, رقم الحديث 173 - (759),).‏ অর্থ: আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ‎বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত এবং পুণ্য লাভের আশায় রমাজান বেশি বেশি ‎নামাজ আদায় করবে, সে ব্যক্তির অতীতের সমস্ত ছোটো ছোটো পাপ ক্ষমা করে দেওয়া ‎হবে”। ‎[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০০৯ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭৩ -(৭৫৯] ।

৪। এই পবিত্র রমাজান মাসে শবে কাদার বা লাইলাতুল কাদার রয়েছে। আর এই শবে ‎কাদার বা লাইলাতুল কাদার হলো সারা বছরের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ রজনী। ‎

এই শবে কাদার বা লাইলাতুল কাদার ও সর্বশ্রেষ্ঠ রজনীর বিষয়ে মহান আল্লাহ তাঁর ‎পবিত্র গ্রন্থ কুরআনের মধ্যে বলেছেন যে, সেই রজনীতে একটি সৎ কর্ম এক হাজার ‎মাসের সৎ কর্ম চেয়েও উত্তম। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ)، سورة القدر، الآية 3. ‏‎ ‎ ভাবার্থের অনুবাদ: “শবে কাদার বা লাইলাতুল কাদারের একটি সৎ কর্ম ওই সমস্ত এক ‎হাজার মাসের সৎ কর্ম চেয়েও উত্তম, যে সমস্ত মাসে শবে কাদার বা লাইলাতুল কাদার ‎নেই”। (সূরা আল কাদার, আয়াত নং ৩) । আর এই শবে কাদার বা লাইলাতুল কাদার কিংবা পবিত্র রজনী রমাজান মাসের শেষ ‎দশকের কোনো একটি রাতে হয়ে থাকে। তবে এই রাতটিকে নির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত ‎করা হয়নি। ‎ শবে কাদার বা লাইলাতুল কাদারে কিংবা পবিত্র রজনীতে যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত ‎এবং পুণ্য লাভের আশায় বেশি বেশি নামাজ আদায় করবে এবং সৎ কর্ম করবে, তার ‎অতীতের সমস্ত ছোটো ছোটো পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।

রোজার মর্যাদা

রোজার অনেক মর্যাদার বিবরণ প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, ‎সেইগুলির মধ্যে রয়েছে:‎

১। পাপের ক্ষমা লাভ হয়

যে ব্যক্তি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর প্রতি ইমান রেখে, তাঁর পূর্ণ ‎বশ্যতা স্বীকার করে এবং তাঁর প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে আর রোজার মর্যাদার প্রতি ‎বিশ্বাস রেখে পবিত্র‎‏‎ ‎রমাজান মাসের রোজা রাখবে, তার অতীতের সমস্ত ছোটো ছোটো ‎পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। তাই আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ ‎‎[সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:‎ ‏"مَن صَامَ رَمْضَانَ إِيْمَانًا وَاحْتِسَابًا؛ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ".‏ ‏(صحيح البخاري, رقم الحديث 2014, وصحيح مسلم, رقم الحديث 175 - (760),).‏ অর্থ: “যে ব্যক্তি ইমানের সহিত এবং পুণ্য লাভের আশায় রমাজান মাসে রোজা রাখবে, ‎সে ব্যক্তির অতীতের সমস্ত ছোটো ছোটো পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে”। ‎[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৪ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭৫ -(৭৬০] ।

২। রোজাদার ব্যক্তি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করার ‎সময় যে পুরষ্কার এবং অনুগ্রহ লাভ করবে, তাতে সে আনন্দিত হবে। ‎

তাই আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ‎বলেছেন:‎ ‏"لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا: إِذَا أَفْطَرَ فَرِحَ وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِهِ".‏ ‏(صحيح البخاري، رقم الحديث 1904، وصحيح مسلم، رقم الحديث 163 - (1151)،).‏ অর্থ: “রোজাদারের আনন্দিত হওয়ার সময় হলো দুইটি। যখন সে ইফতার করবে, ‎তখন সে একবার আনন্দিত হবে। আর যখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ ‎করবে, তখন সে রোজার বিনিময় লাভ করে আনন্দিত হবে”। ‎[সহীহ বুখারী, হাদীস নং 1904 এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 163 -(1151)]।

৩। জান্নাতের একটি দরজার নাম হলো আর রাইয়ান, সেই দরজায় ওই সমস্ত রোজা ‎পালনকারী মানুষ প্রবেশ করবেন, যারা সম্পূর্ণরূপে ফরজ রোজা পালন করেন অতঃপর ‎অতিরিক্ত রোজা বা অনেক নফল রোজা রাখেন কিংবা উপাসনা বা ইবাদতের মধ্যে ‎যারা বেশি রোজা রাখার অভ্যাসে অভ্যস্ত। তাঁরা ব্যতীত সেই দরজা দিয়ে অন্য কোনো ‎মানুষ প্রবেশ করবে না। ‎

قَالَ رَسُوْلُ اللهَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ، يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، لَا يَدْخُلُ ‏مَعَهُمْ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ، يُقَالُ: أَيْنَ الصَّائِمُوْنَ؟ فَيَدْخُلُوْنَ مِنْهُ؛ فَإِذَا دَخَلَ آخِرُهُمْ، أُغْلِقَ؛ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ".‏ ‏(صحيح مسلم، رقم الحديث 166 - (1152)، واللفظ له، صحيح البخاري، رقم الحديث ‏‏1896).‏ ‏ ‏ অর্থ: আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ‎বলেছেন: “জান্নাতে আর রাইয়ান নামক একটি দরজা আছে। সেই দরজা দিয়ে ‎কিয়ামতের দিন তাঁরাই প্রবেশ করবেন, যারা সম্পূর্ণরূপে ফরজ রোজা পালন করেন ‎অতঃপর অতিরিক্ত রোজা বা অনেক নফল রোজা রাখেন কিংবা উপাসনা বা ইবাদতের ‎মধ্যে যারা বেশি রোজা রাখার অভ্যাসে অভ্যস্ত। তাঁদের সাথে অন্য কোনো মানুষ সেই ‎দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে: যারা সম্পূর্ণরূপে ফরজ রোজা ‎পালন করেন অতঃপর অতিরিক্ত রোজা বা অনেক নফল রোজা রাখেন অথবা উপাসনা ‎বা ইবাদতের মধ্যে যারা বেশি রোজা রাখার অভ্যাসে অভ্যস্ত, তাঁরা কোথায়? তখন ‎তাঁরা সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবেন। তাঁদের সকলের প্রবেশের পরই সেই দরজাটি ‎বন্ধ করে দেওয়া হবে। সুতরাং সেই দরজাটি দিয়ে আর অন্য কোনো মানুষ প্রবেশ ‎করবে না”। ‎ ‎[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৬৬ - (১১৫২) এবং সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৯৬, তবে ‎হাদীসের শব্দগুলি সহীহ মুসলিম থেকে নেওয়া হয়েছে]। ‎

৪। অবশ্যই রোজার পুরস্কার ও প্রতিদান প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর ‎সাথেই সম্পৃক্ত। ‎

যে ব্যক্তির পুরস্কার ও প্রতিদান মহা সম্মানিত, মহা দানশীল এবং মহা দয়ালু প্রকৃত ‎সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর উপর ন্যস্ত রয়েছে, সে মহান আল্লাহর মহা ‎সম্মানের সুসংবাদ গ্রহণ করুক। যেহেতু বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ‎ওয়াসাল্লাম] তাঁর প্রতিপালক মহান আল্লাহর কাছ থেকে কুদসী হাদিস বর্ণনা করেছেন ‎এবং বলেছেন:‎ ‏"كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَامَ؛ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ".‏ ‏(صحيح البخاري، رقم الحديث 1904، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 163 - ‏‏(1151)،).‏ অর্থ: “রোজা আমার জন্য; তাই আমি নিজেই রোজার পুরস্কার প্রদান করবো”। ‎[সহীহ বুখারী, হাদীস নং 1904 এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 163 -(1151), তবে ‎হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]। যে হাদীসের মূল ভাবার্থ বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রকৃত ‎সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কাছ থেকে অর্জন করেছেন এবং তা নিজের ‎ভাষায় বর্ণনা করেছেন, সেই হাদীসকে কুদসী হাদিস বলা হয়। এই ক্ষেত্রে অন্য উক্তিও ‎আছে।

রোজা রাখার হিকমত ও তাৎপর্য বা রহস্য

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ রোজা ফরজ করেছেন অনেকগুলি হিকমত ‎ও তাৎপর্য বা রহস্যের কারণে। এবং ইহকাল ও পরকালের অনেক মঙ্গলের জন্য। আর ‎সেই সমস্ত মঙ্গলের মধ্যে রয়েছে:‎

রোজা রাখার মাধ্যমে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করা হয়। আর তাকওয়া বা আল্লাহকে ভক্তিসহকারে ভয় করে তাঁর সঠিক ভক্ত হওয়ার ভাবার্থ হলো এই যে, মহান ‎আল্লাহর ভয়, ভালোবাসা এবং তাঁর অতিশয় শ্রদ্ধাসহ তাঁকে মেনে চলা তাঁর আনুগত্য করা এবং তাঁর ‎অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকা।

রোজা রাখা হলো একটি ইবাদত বা উপাসনা। এই‏ ‏ইবাদত বা উপাসনার দ্বারা মানুষ তার প্রকৃত ‎প্রতিপালক ও সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করে তার অতিশয় প্রিয় বস্তু বর্জন করার ‎মাধ্যমে এবং তার বৈধ কামনা ও বাসনা দমন করার মাধ্যমে। এর দ্বারা সে তার প্রকৃত প্রতিপালক ও ‎সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আনুগত্য করে এবং তাঁর বিনিবারিত বা নিষিদ্ধ বস্তু পরিত্যাগ করে। ‎

২। রোজার মাধ্যমে সকল প্রকারের পাপ, অন্যায় ও অপরাধ ছেড়ে দেওয়ার অভ্যাস ‎তৈরি হয়।

অতএব প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আনুগত্যের উদ্দেশ্যে রোজাদার ‎ব্যক্তি প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক রোজা রাখার অবস্থায় অনেক বৈধ বস্তু হতেও ‎বিরত থাকে। এর কারণে সে নিজের কামনা ও বাসনার সমস্ত পাপ, অন্যায় ও অপরাধ ‎দমনে আরো বেশি ক্ষমতা রাখে। ‎

৩। রোজার দ্বারা দরিদ্রদেরকে স্মরণ করা হয় এবং তাদের কষ্টের কথা সঠিকভাবে ‎উপলব্দি করা হয় আর তাদের সহায়তা করা হয়।

রোজার মাধ্যমে বঞ্চিত হওয়ার কষ্ট এবং ক্ষুধার যন্ত্রণার বিষয়টি ধনবান মানুষের জন্য ‎অতিশয় সুন্দরভাবে প্রকাশিত হয়। তাই সে রোজার মাধ্যমে ওই সমস্ত দরিদ্রদের কথা ‎স্মরণ করতে পারে, যারা তাদের জীবনে সকল প্রকার কষ্টের মোকাবিলা করে। সুতরাং ‎রোজাদার ব্যক্তি তার রোজার মাধ্যমে অভাবগ্রস্ত ভাইদের অবস্থা স্মরণ করতে পারে ‎এবং তাদের ক্ষুধা ও পিপাসার প্রবল যন্ত্রণার কথা স্মরণ করে এবং তাদের প্রতি ‎সাহায্য, সহযোগিতা ও সহানুভূতির হাত প্রসারিত করে। ‎

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন