মডেল: বর্তমান বিভাগ
পাঠ্য বিষয় ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস বা ঈমান
ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস বা ঈমানের অর্থ:
ফেরেশতাদের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস বা ঈমান স্থাপন করা অপরিহার্য। মানব জগৎ ও জিন জগৎ ব্যতীত ফেরেশতাদের জগৎ একটি আলাদা অদৃশ্য জগৎ। ফেরেশতাগণ হলেন অতিশয় নিষ্ঠাবান ন্যায়পরায়ণ মহাসম্মানিত সত্তার অধিকারী। তাঁরা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর ইবাদত বা উপাসনায় ও তাঁর আদেশ পালনে সদাসর্বদা অতি তৎপর। আর তাঁরা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আদেশ কোনো সময় অমান্য করেন না। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: ) لَا يَعْصُوْنَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُوْنَ مَا يُؤْمَرُوْنَ) سورة التحريم، جزء من الآية 6. ভাবার্থের অনুবাদ: “ফেরেশতাগণ প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আদেশ অমান্য করেন না এবং তাঁর আদেশের বিরোধিতাও করেন না আর তাতে কোনো কিছু কমবেশিও করেন না। এবং তাঁদেরকে যা আদেশ করা হয়, তাই সময়মতো অবিলম্বে অতি শীঘ্রই পালন করেন”। (সূরা আত্তাহরীম, আয়াত নং ৬ এর অংশবিশেষ)।
ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস বা ঈমানের গুরুত্ব।
ঈমানের ছয়টি স্তম্ভ রয়েছে, তার মধ্যে ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস বা ঈমান স্থাপন করা হলো একটি ঈমানের অন্যতম স্তম্ভ। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (آمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ)، سورة البقرة، جزء من الآية 285. ভাবার্থের অনুবাদ: “আল্লাহর রাসূল তদীয় প্রতিপালকের পক্ষ হতে তৎপ্রতি যা কিছু অবতীর্ণ করা হয়েছে, তাতে সে বিশ্বাস স্থাপন করেছে। এবং তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে প্রকৃত ঈমানদার মুসলিম জাতি। তারা সবাই সঠিক পন্থায় বিশ্বাস স্থাপন করেছে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমূহের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি”। (সূরা আল্ বাকারা, আয়াত নং ২৮৫ এর অংশবিশেষ)। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ঈমানের বিষয়ে বলেছেন: "أَنْ تُؤْمِنَ بِاللهِ، وَمَلَائِكَتِهِ، وَكُتُبِهِ، وَرُسُلِهِ، وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ". (صحيح مسلم, جزء من رقم الحديث 1- (8),). অর্থ: “ঈমান হলো এই যে, তুমি আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর বার্তাবহ রাসূলগণের প্রতি এবং মৃত্যুবরণের পর পরকালের শেষ দিবসে পুনরুত্থিত হওয়ার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। আর ভাগ্যের মঙ্গল ও অমঙ্গলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১ - (৮) এর অংশবিশেষ]
ফেরেশতাদের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস বা ঈমান স্থাপন করা প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির অপরিহার্য কর্তব্য। তাই যে ব্যক্তি ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস বা ঈমান প্রত্যাখ্যান করবে, সে ব্যক্তি বিপথগামী ও বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। সুতরাং মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে আরো বলেছেন: (وَمَن يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا)، سورة النساء، جزء من الآية 136. ভাবার্থের অনুবাদ: “আর যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর ঐশী বাণীর গ্রন্থসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি এবং মৃত্যুর পরবর্তী অবস্থায় পরকালের জীবন লাভের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস প্রত্যাখ্যান করবে, সে ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি পথভ্রষ্ট ও বিপথগামী হবে”। (সূরা আন নিসা, আয়াত নং ১৩৬ এর অংশবিশেষ)। অতএব ঈমানের এই সমস্ত স্তম্ভ যে ব্যক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে, সে ব্যক্তির প্রতি অমুসলিম হওয়ার বিষয়টিকে নির্ধারিত করা হয়েছে।
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “আকাশে অগণন ফেরেশতা থাকার কারণে, তা বেশি ভারী হয়ে গেছে। যেহেতু আকাশের মাঝে অর্ধ হাত পরিমাণও স্থান নেই যে, সেখানে কোনো ফেরেশতা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর উপাসনার জন্য দণ্ডায়মান অবস্থায় বা রুকুর অবস্থায় অথবা সিজদার অবস্থায় নেই”।
ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের সাথে কি কি বিষয় সংশ্লিষ্ট আছে?
যে সমস্ত ফেরেশতার প্রতি আমাদের ইমান বা বিশ্বাস আছে, সে সমস্ত ফেরেশতার কতকগুলি বৈশিষ্ট্য।
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ফেরেশতাদের জন্য কতকগুলি কর্তব্য ও কর্ম নির্ধারিত করে দিয়েছেন। সেই সমস্ত কর্তব্য ও কর্মের মধ্যে রয়েছে:
আমরা প্রায়ই কোনো একটি নির্দিষ্ট দুর্ঘটনা থেকে কোনো মানুষকে বেঁচে থাকা দেখে আশ্চর্য হই.. তাই আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না যে, ককগুলি ফেরেশতার একটি কাজ হলো মহান আল্লাহর আদেশক্রমে মানুষকে ধ্বংসাত্মক বিপদ থেকে রক্ষা করা।