শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় তালাক

এই অনুচ্ছেদে আমরা তালাকের ভাবার্থ ও কতকগুলি বিধিবিধানের জ্ঞান লাভ করতে ‎পারবো।

  • তালাকের ভাবার্থ জানা।
  • তালাকের বিধিবিধানের বিষয়ে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের কতকগুলি বৈশিষ্ট্যের জ্ঞান লাভ করা।
  • তালাকের উপকার এবং অপকারের বিষয় উপস্থাপন করা।
  • তালাকের বিভাগসমূহের জ্ঞান লাভ করা।
  • নির্দিষ্ট কাল বা ইদ্দতের ভাবার্থ ও কতকগুলি বিধিবিধান জানা।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

একটি অত্যন্ত শক্তিশালী ও গৌরবময় চুক্তি

প্রকৃত ইসলাম ধর্ম পারিবারিক জীবন রক্ষার প্রতি এবং বৈবাহিক জীবনের সংরক্ষণের ‎প্রতি যত্নবান বা যত্নশীল। তাই পবিত্র কুরআন বিবাহ বন্ধনের চুক্তিকে একটি অত্যন্ত ‎শক্তিশালী ও গৌরবময় চুক্তি হিসেবে আখ্যাত করেছে।

প্রকৃত ইসলাম ধর্ম স্বামীস্ত্রীর বৈবাহিক সম্পর্ককে বা দাম্পত্য জীবনকে রক্ষার প্রতি ‎বিশেষভাবে জোর দিয়েছে। তাই সকল স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছে: তারা যেন তাদের ‎স্ত্রীদেরকে সাথে নিয়ে সুখশান্তির সহিত জীবনযাপন করে এবং তাদের তালাক দেওয়া ‎হতে বিরত থাকে। যদিও তারা তাদেরকে অপছন্দ করে বা তাদের কোনো বিষয়কে ‎অপছন্দ করে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏ (وَعَاشِرُوْهُنَّ بِالْمَعْرُوْفِ ۚ فَإِنْ كَرِهْتُمُوْهُنَّ فَعَسَىٰ أَنْ تَكْرَهُوْا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيْهِ خَيْرًا كَثِيْرًا)، سورة النساء، جزء من ‏الآية 19. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “আর প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক তোমরা তোমাদের নারীদের সাথে ‎সদ্ভাব ও প্রীতি বজায় রেখে অতি উত্তম পন্থায় জীবনযাপন করবে। অতঃপর যদি তাদেরকে ‎তোমরা অশালীন আচরণের কারণ বাদে অন্য কোনো কারণে অপছন্দ করো, তাহলে ধৈর্যধারণ ‎করো; কেননা তোমরা তোমাদের নারীদের যে জিনিসটিকে অপছন্দ করছো, নিশ্চয় সেই ‎জিনিসটিকে আল্লাহ মহাকল্যাণকর করে দিবেন”। (সূরা আন্নিসা, আয়াত নং 19 এর ‎অংশবিশেষ)। স্বামীস্ত্রীর অত্যন্ত শক্তিশালী ও গৌরবময় পবিত্র চুক্তি ও সম্পর্ক যেন ছিন্ন বিছিন্ন না হয়। তার ‎জন্য প্রকৃত ইসলাম ধর্ম স্বামীস্ত্রীর মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি করার চেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে সতর্ক ‎করেছে। অতএব আবু হুরায়রা [রাদিয়াল্লাহু আনহু] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর বার্তাবহ ‎রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:‎ ‏«ليس منا من خبَّب امرأة على زوجها» (أبو داود 2175). وخبَّب أي: خدع وأفسد.‏‎ ‎ অর্থ: “সে ব্যক্তি আমাদের পথের লোক নয়, যে ব্যক্তি কোনো স্ত্রীলোককে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ‎উসকানি দিবে ও প্রতারণা করবে এবং কোনো দাসকে তার মনিবের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করে ‎ধোঁকা দিবে”। (আবু দাউদ 2175)। ‎خبَّب‎ এর অর্থ হলো ধোঁকা দেওয়া ও প্রতারণা করা। ‎

প্রকৃত ইসলাম হলো বাস্তবতার ধর্ম

যদিও প্রকৃত ইসলাম ধর্ম স্বামীস্ত্রীর মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক অটুট রাখার ‎প্রতি আগ্রহী। ‎কিন্তু এই পবিত্র ধর্মটি হলো আসলে বাস্তবতার ধর্ম। তাই এই পবিত্র ধর্ম ‎এমন কোনো ‎বিধান প্রদান করে না, যে সেই বিধান মানব জাতির প্রকৃত স্বভাবের বা অবস্থার ‎বিরুদ্ধে ‎চলে যাবে এবং তাদের বাসনা বা আকাঙ্খা অথবা অনুভূতি এবং চাহিদাকে ‎ভেঙ্গে দিবে ‎কিংবা তুচ্ছ করবে। বরং এই পবিত্র ধর্ম মানব জাতির অনুভূতি এবং ‎চাহিদার প্রতি ‎খেয়াল রাখে এবং বিচার বিবেচনা করে তাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলির ‎প্রতি লক্ষ্য ‎রাখে। যেহেতু প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য এক ও অদ্বিতীয় মহান আল্লাহ ‎জানেন যে, ‎অনেক সময় বৈবাহিক জীবন শেষ হওয়ার চেয়ে টিকে থাকাতে বিষম ‎সমস্যা ও ‎সংকটময় অবস্থা এবং অকল্যাণ ও অনিষ্ট সৃষ্টি হয়। আর প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা ‎সত্য উপাস্য এক ও অদ্বিতীয় মহান আল্লাহ এটাও জানেন যে, কোনো কোনো সময় ‎তালাক বা বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়টি অতি প্রয়োজনীয় বা অত্যন্ত জরুরি কাজ হিসেবেই ‎পরিগণিত হয়ে থাকে। তাই জেনে রাখা দরকার যে, তালাক বা বিবাহবিচ্ছেদ বৈধ বা ‎জায়েজ হওয়ার মধ্যেও রয়েছে মহা রহস্য এবং মানুষের জন্য মহা প্রশস্ততা ও ‎উদারতা। যদিও কোনো কোনো সময়ে তালাকের মধ্যে বা বিবাহবিচ্ছেদের মধ্যে অশান্তি ‎এবং কষ্ট প্রকাশ পেয়ে থাকে।

তালাক বা বিবাহবিচ্ছেদের বৈধতা

তালাক বা বিবাহবিচ্ছেদের বৈধতা প্রমাণিত হয়েছে পবিত্র কুরআনের অনেক আয়াতে ‎এবং আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর ‎অনেক হাদীসে। তাই কতকগুলি আয়াত এবং কতকগুলি হাদীস তালাক বা ‎বিবাহবিচ্ছেদের সমস্ত বিধিবিধানকে ও আদবকায়দাকে সুশৃঙ্খলিত ও সুনিয়ন্ত্রিত করে ‎দিয়েছে। আর পবিত্র কুরআনের একটি সূরার নাম দেওয়া হয়েছে সূরা তালাক বলে। ‎

তালাক এর আভিধানিক অর্থ

বাঁধন খুলে দেওয়া এবং মুক্তি দেওয়া

প্রকৃত ইসলামের পরিভাষায় তালাক অর্থ

প্রকৃত ইসলামের পরিভাষায় তালাক হলো নির্দিষ্ট শব্দের দ্বারা অবিলম্বে অথবা বিলম্ব ‎করে বৈবাহিক সম্পর্ক বা বৈবাহিক বন্ধন শেষ করার প্রক্রিয়া। আর তালাকের নির্দিষ্ট ‎শব্দ হলো: খোলাখুলিভাবে বা প্রকাশ্যভাবে ও স্পষ্টভাবে তালাক দেওয়া। যেমন:- ‎তালাক শব্দ ব্যবহার করেই তালাক দেওয়া। আর অন্যটি হলো অস্পষ্টভাবে তালাক ‎দেওয়া। তাতে তালাক শব্দ ব্যবহার না করেই তালাক দেওয়া। যেমন:- পৃথক বা ‎আলাদা হওয়ার শব্দ বা হারাম করার শব্দ অথবা মুক্ত করার শব্দ ইত্যাদি ব্যবহার করে ‎তালাক দেওয়া হয়। আর তালাক দেওয়ার ক্ষেত্রে তালাক শব্দ ব্যবহারের মতোই ‎তালাক শব্দটি লিখেও তালাক দেওয়া হয়। এবং বোধগম্য ইঙ্গিত বা সঙ্কেত ও ইশারার ‎মাধ্যমেও তালাক দেওয়া হয়। আর তালাক শব্দের সাথে (খুলা) শব্দটি সংযুক্ত করা ‎হয়। এবং আদালতের বিচারকের দ্বারা একটি অপ্রত্যাহারযোগ্য বিবাহবিচ্ছেদকেও ‎তাফরীক বলা হয় এবং তা তালাক শব্দের সাথে সংযুক্ত করা হয়। ‎

তালাকের কতকগুলি উপকারিতা

١
নতুনভাবে এমন দুইটি নতুন পরিবারে সুদৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করা, যে সুদৃঢ় ভিত্তি প্রথম ‎পরিবারে ছিলো না। আর মহান আল্লাহর অনুগ্রহ সুপ্রশস্ত ও অতি উত্তম। সুতরাং মহান ‎আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(وَإِنْ يَتَفَرَّقَا يُغْنِ اللَّهُ كُلًّا مِنْ سَعَتِهِ وَكَانَ اللَّهُ وَاسِعًا حَكِيمًا)، سورة النساء، الآية 130. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “স্বামীস্ত্রী যদি কোনো কারণে তালাকের মাধ্যমে পৃথক বা আলাদা ‎হয়ে যায়, তাহলে মহান আল্লাহ তাদের প্রত্যেককেই অপরের মুখাপেক্ষিতা থেকে ‎রেহাই দিবেন এবং তাদের প্রত্যেককেই অভাবমুক্ত করবেন। যেহেতু আল্লাহ অসীম ‎করুণাময়, প্রজ্ঞাবান”। ‎ ‎(সূরা আন নিসা, আয়াত নং ১৩০)। ‎
٢
যে জীবনে নিমজ্জিত হয় বিভিন্ন প্রকারের দ্বন্দ্ব, শত্রুতা বা দুর্ব্যবহার, সেই জীবনের ‎মহা অনিষ্ট দূরীভূত করা। আর এই ধরণের মহা অনিষ্ট কোনো কোনো সময় কদাচার ‎বা ব্যভিচারের দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহ অমাদেরকে রক্ষা করুন। ‎
٣
প্রথম বিবাহের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অনেক শিক্ষা লাভ করা। তাই অনেক বিষয়ে ‎পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ নেওয়া, নিজের ভুলত্রুটির বিষয়ে সতর্ক হওয়া এবং তা ‎দূরীভূত করার চেষ্টায় তৎপর থাকা। আর এই বিষয়গুলি দ্বিতীয় বিবাহের জীবনে পূর্ণ ‎সফলতা লাভে সহায়ক হয়।
٤
বিভিন্ন প্রকারের দ্বন্দ্ব এবং সংঘর্ষের অবসান ঘটানো আর বিদ্বেষ, শত্রুতা ও অসদাচরণ ‎বা দুর্ব্যবহার ও পারিবারিক বিবাদের সহিংসতার সমাপ্তি ঘটানো।
٥
পরিবারের সদস্যদেরকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা এবং তাদের মানসিক ও ‎দৈহিক অবস্থার সংরক্ষণ করা। কেননা যে বসবাসের বাড়িতে শান্তি ও নিরাপত্তা থাকে ‎না, সে বাড়িতে বসবাস করা শিশুদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

তালাকের কতকগুলি ক্ষতিকর বিষয়

١
পারিবারিক অস্তিত্বের বিচ্ছিন্নতা, স্নেহ ও মমতার ভিত্তির উপর যে নীড় বা বাসস্থান ‎গড়ে তোলার কথা ছিলো সে নীড় বা বাসস্থানের ছারখার করা হয়। ‎
٢
তালাকের পর মাতাপিতা যদি ভালো ব্যবহার না করে এবং তাদের মধ্যে বিদ্বেষ, ‎শত্রুতা ও অসদাচরণ বা দুর্ব্যবহার বিরাজ করতেই থাকে আর শিশুদের সাথে তারা ‎সম্পর্ক ছিন্ন করেই রাখে অথবা শিশুদেরকে নিয়ে তাদের একজন অরেক জনের উপরে ‎চাপ সৃষ্টির মাধ্যম গ্রহণ করতে থাকে, তাহলে শিশুরা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হবে ‎এবং চিন্তাভাবনার দিক দিয়ে ভেঙ্গে পড়বে আর চারিত্রিক দিক দিয়ে অধঃপতনের শেষ ‎সীমা অতিক্রম করবে। ‎
٣
স্বামীস্ত্রীর মধ্যে বিদ্বেষ ও শত্রুতা বা দুর্ব্যবহার কোনো কোনো সময়ে তাদের দুই জনের ‎দুই পরিবার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে বিদ্বেষ ও শত্রুতার পরিধি অতিশয় ‎প্রসারিত হয়। আর এই বিষয়টি প্রকৃত ইসলাম ধর্মের বিপরীত আচরণ। কেননা প্রকৃত ‎ইসলাম ধর্ম তো মুসলিম সমাজকে ঐক্যের ভিত্তিতে সঙ্ঘবদ্ধভাবে জীবনযাপন করার ‎প্রতি অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করে। ‎

তালাকের প্রকারভেদ ‎

١
রাজঈ বা প্রত্যাহারযোগ্য তালাক
٢
ছোটো বায়েন তালাক ‎
٣
বড়ো বায়েন তালাক ‎

রাজঈ বা প্রত্যাহারযোগ্য তালাক

কোনো পুরুষ ব্যক্তি তার স্ত্রীকে প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার তালাক দেওয়ার পরে, সে ‎তার স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই এবং তার সাথে নতুন বিবাহ ছাড়াই তাকে নিজের স্ত্রী ‎হিসেবে ইদ্দতের মধ্যেই বা নির্দিষ্ট কালের মধ্যেই ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার রাখে।

ছোটো বায়েন তালাক

কোনো পুরুষ ব্যক্তি তার স্ত্রীকে প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার তালাক দেওয়ার পরে, সে ‎তার স্ত্রীর ইদ্দত বা নির্দিষ্ট কাল অতিবাহিত হওয়ার পরে তাকে নতুনভাবে বিবাহ করে ‎ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারবে। ‎

বড়ো বায়েন তালাক

কোনো পুরুষ ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তৃতীয়বার তালাক দেওয়ার পরে, সে তার স্ত্রীকে নতুন ‎দেনমোহর দিয়ে এবং নতুনভাবে বিবাহ করে ওই সময়ে ফিরিয়ে নিতে পারবে, যে ‎সময়ে তার স্ত্রী স্বাধীনভাবে অন্য পুরুষকে বিয়ে করবে ও তার সাথে স্বাভাবিকভাবে ‎সংসার করবে। অতঃপর উক্ত স্বামী যদি তাকে স্বাভাবিকভাবে নিয়মমাফিক ছলচাতুরী ‎ছাড়েই তালাক দেয় কিংবা সে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে সে সময়ে সে তার প্রথম ‎স্বামীকে ইচ্ছা করলে পুনরায় বিয়ে করতে পারবে।

রাজঈ বা প্রত্যাহারযোগ্য তালাক, ছোটো বায়েন তালাক এবং বড়ো বায়েন তালাকের ‎‎নিয়মকানুন ও বিধিবিধানগুলি হলো প্রকৃত ইসলাম ধর্মের সৌন্দর্য্য ও বৈশিষ্ট্যের স্পষ্ট ‎নিদর্শন। সুতরাং তালাক বা বিবাহবিচ্ছেদই শেষ লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। তাই রাজঈ বা ‎প্রত্যাহারযোগ্য তালাক অথবা ছোটো বায়েন তালাকের সময়ে স্বামীস্ত্রী উভয়ই তাদের ‎সমস্যার চাপ থেকে দূরে অবস্থান করে তারা শান্তভাবে তাদের তালাকের পরিণতিগুলির ‎বিষয়ে পুনর্বিবেচনা ও চিন্তা করার একটি সুযোগ পাবে এবং ভালো সময়ও পাবে। ‎যাতে তারা তাদের সমস্যার সমাধানের জন্য মঙ্গলদায়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। ‎ তদ্রূপ বড়ো বায়েন তালাকের ক্ষেত্রে মহিলা তার দ্বিতীয় স্বামীর কাছ থেকে ‎স্বাভাবিকভাবে নিয়মমাফিক তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার কারণে সে নিজে এবং তার আগের ‎স্বামী উভয়ই তারা তাদের নতুন জীবন শুরু করার প্রতি পুনরায় প্রত্যাবর্তন করতে ‎পারে। আর এই বিষয়টি তাদের জন্য একটি সুন্দর বিকল্প হিসেবে পরিগণিত হবে। ‎বরং অনেক সময়ে সাব্যস্ত হয়েছে যে, এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে দাম্পত্য জীবন পুনরায় ‎শক্ত ও মজবুত ভিত্তির উপরে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। ‎

ইদ্দত বা নির্দিষ্ট সময়কাল ‎

প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক ইদ্দত সেই নির্দিষ্ট সময়কালকে বলা হয়, যে নির্দিষ্ট ‎সময়কাল পর্যন্ত কোনো তালাকপ্রাপ্তা মহিলা বা যে মহিলার স্বামী মৃত্যুবরণ করেছে সে ‎মহিলা অন্য কোনো পুরুষকে বিয়ে করতে পারে না। সুতরাং সেই নির্দিষ্ট সময়কাল ‎শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা অপরিহার্য হবে। অতঃপর সেই তালাকপ্রাপ্তা মহিলা ‎বা যে মহিলার স্বামী মৃত্যুবরণ করেছে সে মহিলা অন্য পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে। ‎

ইদ্দতের সময়কালে স্ত্রীর অধিকার হলো এই যে, সে তার স্বামীর বাড়িতে ইদ্দতের ‎সময়কাল অতিবাহিত করবে। আর এই সময়ে তার খোরপোশ বা ভরণপোষণ ‎স্বামীকেই বহন করতে হবে। আর এই অবস্থায় তার স্বামী মৃত্যুবরণ করলে তার স্বামীর ‎মিরাসে তার সম্পূর্ণ অধিকার থাকবে। যেহেতু সে তার ইদ্দতের সময়কালের মধ্যে ‎রয়েছে। আর ইদ্দতের সময়কালে পুরুষদের বিবাহের প্রস্তাব তার জন্য গ্রহণ করা ‎হারাম বা অবৈধ হবে।

ইদ্দত পালন বৈধ হওয়ার তাৎপর্য বা রহস্য

١
মহান আল্লাহর উপাসনা ও নৈকট্য লাভ করা। সুতরাং মুসলিম নারী এবং মুসলিম পুরুষ ‎মহান আল্লাহর নিকট পূর্ণ বশ্যতা স্বীকার করে। তাই তারা মহান আল্লাহর দাসত্ব ‎স্বীকার করার উদ্দেশ্যে তাঁর আদেশ পালনে সদাসর্বদা তৎপর থাকে। ‎
٢
নারীর জরায়ুতে কোনো ভ্রূণ বা সন্তান না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা। ‎
٣
তালাকের পর স্বামীকে তার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ ‎প্রদান করা।
٤
স্বামীর মৃত্যুবরণ করার পর শোক ভোগ করা।

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন