মডেল: বর্তমান বিভাগ
পাঠ্য বিষয় মহান আল্লাহ রোজা রাখার বিষয়ে যাদেরকে ছাড় দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ রোজা রাখার বিষয়ে যাদেরকে ছাড় দিয়েছেন।
মহান আল্লাহ যাদেরকে রমাজান মাসের ফরজ রোজা রাখার বিষয়ে ছাড় দিয়েছেন; তাদের প্রতি সুবিধা, সহযোগিতা ও কৃপা করার উদ্দেশ্যে, তাদের বিবরণ হলো:
তাই রমাজান মাসে তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। সুতরাং সে তার ছুটে যাওয়া রোজা রমাজান মাসের পর কাজা করে নিবে।
অতিশয় বৃদ্ধ হওয়ার কারণে বা এমন রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে যে, সেই রোগ থেকে আরোগ্য লাভের কোনো আশা নেই, এই ধরণের মানুষের জন্য রমাজান মাসের রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে। সুতরাং তারা রমাজান মাসের রোজা রাখার পরিবর্তে প্রত্যেক দিনের রোজার বদলে একজন মিসকিনকে দেড় কেজি স্বদেশের খাবার প্রদান করবে।
সুতরাং যে মহিলা তার মাসিক ঋতুস্রাব অথবা সন্তান প্রসবজনিত স্রাবের অবস্থায় রয়েছে, তার জন্য রমাজান মাসের রোজা রাখা অবৈধ। আর সে যদি এই অবস্থায় রমাজান মাসের রোজা রাখে, তাহলে তার রোজা সঠিক বলে বিবেচিত হবে না। তবে সে যখন মাসিক ঋতুস্রাব অথবা সন্তান প্রসবজনিত স্রাব হতে পবিত্র হবে, তখন রোজা রাখবে। আর সে তার রমাজান মাসের ছুটে যাওয়া রোজা রমাজান মাসের পর অন্যান্য দিবসে কাজা করবে।
গর্ভবতী মহিলা বা দুধ পান করায় এমন মহিলা যদি নিজের স্বাস্থ্যের বা পেটের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার ভয় পায়, তাহলে সে রমাজান মাসে রোজা না রেখে রমাজান মাসের ছুটে যাওয়া সমস্ত রোজা রমাজান মাসের পর অন্যান্য দিবসে কাজা করবে। যেহেতু আনাস বিন মালিক [রাদিয়াল্লাহু আনহু] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: বসো আমি তোমাকে নামাজ ও রোজা সম্পর্কে কিছু কথা বলবো। জেনে রাখো! নিশ্চয় মহান আল্লাহ মুসাফিরের কিছু নামাজ লঘু বা হালকা করে দিয়েছেন। আর মুসাফিরের ও গর্ভবতী মহিলার এবং দুধ পান করায় এমন মহিলার রোজা রাখার বিষয়টিকেও হালকা করে দিয়েছেন। [সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নং ১৬৬৭, সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪০৮ এবং সুনান্ নাসায়ী, হাদীস নং: ২২৭৪, আল্লামা মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দিন আলআলবাণী হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন]।
মুসাফির তার সফরের অবস্থায় এবং তার সফরে চার দিনের কম সময় ধরে অবস্থান করলে সফরের অবস্থায় সে রোজা না রেখে তার ছুটে যাওয়া সমস্ত রোজা রমাজান মাসের পর অন্যান্য দিবসে কাজা করবে।
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (وَمَنْ كَانَ مَرِيضاً أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيْدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيْدُ بِكُمُ الْعُسْرَ)، سورة البقرة، جزء من الآية 185. ভাবার্থের অনুবাদ: “সুতরাং তোমাদের মধ্যে থেকে যে ব্যক্তি পবিত্র রমাজান মাসে উপস্থিত হবে, সে ব্যক্তি তাতে রোজা পালন করবে। আর যে ব্যক্তি পবিত্র রমাজান মাসে অসুস্থ হবে, কিংবা সফরে থাকবে, সে ব্যক্তি তার অসুস্থ থাকার কারণে কিংবা সফরে থাকার কারণে ছুটে যাওয়া রোজার সংখ্যা অন্যান্য দিবসে কাজা করবে। মহান আল্লাহ তোমাদের জন্য প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক জাগতিক বিষয়ে এবং ধর্মীয় বিষয়ে সহজ পন্থাই পছন্দ করেন এবং তিনি তোমাদের জন্য কোনো বিষয়ে করুণ বা কষ্টদায়ক পন্থা পছন্দ করেন না” । (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ১৮৫ এর অংশবিশেষ)।
অকারণে রমাজান মাসের রোজা ছেড়ে দেওয়ার বিধান কী?
যে ব্যক্তি অকারণে রমাজান মাসের রোজা ছেড়ে দিবে, তার জরুরি কর্তব্য হবে এই যে, তাকে অবশ্যই আল্লাহর এই মহা নাফরমানি ও মহা পাপ থেকে তওবা করতে হবে এবং পুনরায় এই মহা পাপ কাজ ও মহা নাফরমানির কাজ না করার জন্য দৃঢ় সংকল্প করতে হবে। এবং তার ছেড়ে দেওয়া রোজা পরবর্তীতে তাকে কাজা বা সম্পাদন করতে হবে। তবে যে ব্যক্তি রোজার মাসে দিনের বেলায় সহবাস করবে, সে ব্যক্তি এই মহা পাপ থেকে তওবা করবে এবং তার ছুটে যাওয়া রোজা পরবর্তীতে কাজা বা সম্পাদন করবে আর এর সাথে সাথে তাকে কাফ্ফারা দিতে হবে। আর তা হলো এই যে, একজন মুসলিম ক্রীতদাসকে ক্রয় করে তার দাসত্ব থেকে তাকে মুক্ত বা স্বাধীন করবে। আর জেনে রাখা দরকার যে, প্রকৃত ইসলাম ধর্ম মানুষকে তার দাসত্ব থেকে মুক্ত বা স্বাধীন করার প্রতি অনেক গুরুত্ব প্রদান করেছে। কিন্তু এখনকার অবস্থার মতো ক্রীতদাস পাওয়া না গেলে এক সঙ্গে টানা দুই মাস রোজা রাখবে। তবে কোনো ব্যক্তি যদি টানা দুই মাস রোজা রাখতে না পারে, তাহলে সে ষাটজন মিসকিনকে বা অতি দরিদ্র ব্যক্তিকে খাদ্যদ্রব্য প্রদান করবে।