শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় শিরোনাম:‎ শীতকালের সাথে জড়িত থাকা কতকগুলি ঈমান সংক্রান্ত বিষয়ের উত্থাপন।

বিবরণ:‎ মুসলিম ব্যক্তির কর্তব্য হলো এই যে, সে যেন মহাবিশ্বের জাগতিক নিদর্শনগুলির ‎বিষয়ে মনোযোগের সাথে চিন্তা করে দেখে ও গবেষণা করে এবং গাফিল বা ‎অমনোযোগী না হয়। আমরা এই অনুচ্ছেদে শীতকালের সাথে জড়িত থাকা কতকগুলি ‎বিষয়ের জ্ঞান লাভ করবে। ‎ বিষয়ের উপস্থাপন করবো ঈমান সংক্রান্ত বিষয় জানতে পারবো। ‎

উদ্দেশ্য: 

  • শীতকালের বিষয়ে এবং সারা বছরের বিভিন্ন ঋতুর পরিবর্তনের বিষয়ে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর হিকমত বা রহস্যের জ্ঞান লাভ করা।
  • শীতকালের বিভিন্ন অবস্থার বিষয়ে মনোযোগের সাথে চিন্তা ও গবেষণা করে দেখা; যাতে ইমান বৃদ্ধি হয়।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

শীতকাল হলো বৎসরের প্রাকৃতিক একটি ঋতু বা মৌসুম, প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ এই ঋতুটিকে বা মৌসুমকে কতকগুলি মহা তাৎপর্যের কারণে বা রহস্যের কারণে নির্ধারিত করেছেন।

পবিত্র কুরআনে শীতকালের আলোচনা

পবিত্র কুরআনের মধ্যে শীতকাল শব্দটি শুধুমাত্র একবারই উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং ‎মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(لإِيلافِ قُرَيْشٍ، إِيلافِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ)، سورة قريش، الآيات 1-‏‏2.‏ ভাবার্থের অনুবাদ: তোমরা আশ্চর্যান্বিত ও বিস্মিত হও কুরাইশদের আচরণের কারণে। ‎তারা শীতকালে ও গ্রীষ্মকালের বাণিজ্যযাত্রায় অতি মগ্ন থাকতে ভালোবাসে”। (সূরা ‎আল কুরাইশ, আয়াত নং ১-২)।‎ শীতকালের সফর হলো এই যে, কুরাইশ বংশের ব্যবসায়ীরা শীতকালে ব্যবসা করার ‎জন্য ইয়েমেন দেশ ভ্রমণ করতো এবং গ্রীষ্মকালে সিরিয়া বা শাম দেশ ভ্রমণ করতো। ‎

আর শীতকালের পরে আসে গ্রীষ্মকাল ‎আর দুই ঋতু শরৎকাল এবং বসন্তকাল হলো ‎দুই ঋতু শীতকাল এবং গ্রীষ্মকালের মধ্যে পড়ছে। তাই কোনো কোনো আলেম বা ‎পণ্ডিত বলেছেন: বছরে আসলে দুইটি ঋতু রয়েছে: গ্রীষ্মকাল ও শীতকাল। ‎ ‎(তবে কোনো কোনো দেশে যেমন:- ভারত ও বাংলাদেশে বছরে ছয়টি ঋতু আছে: ‎গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। এই ছয়টি ঋতুর একত্র নাম।) ‎

শীতকাল হলো প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর শক্তি, প্রজ্ঞা এবং করুণার ‎নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত একটি নিদর্শন:‎

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ দিন, রাত, গরম, ঠাণ্ডা, শীত ও গ্রীষ্মের ‎আবর্তন ঘটিয়ে থাকেন। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(إنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِّأُولِي الأَلْبَابِ)، سورة آل عمران، ‏الآية 190. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “নিশ্চয় সমস্ত আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে এবং দিবারাত্রির ‎আবর্তনে জ্ঞানীদের জন্যে রয়েছে অনেক নিদর্শন”। (সূরা আল ইমরান, আয়াত নং ‎১৯০)। আর এই সমস্ত আবর্তন প্রাকৃতিক কারণে হলেও জেনে রাখতে হবে যে, এই প্রাকৃতিক ‎কারণগুলিরও প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা হলেন সর্বশক্তিমান পরম দয়ালু সত্য উপাস্য মহান ‎আল্লাহ।

শীতকাল হলো জীবনকে সৎ কর্মে ব্যবহার করার এবং মহান আল্লাহর অনুগ্রহকে ‎ভালো কাজে ব্যবহার করার উত্তম সুযোগ। ‎

শীতকাল এবং সময়ের পরিবর্তন হলো জীবন অতিবাহিত করার ক্ষেত্রে ভুলভ্রান্তি তদন্ত ‎‎করে সঠিক পথে নিজেকে পরিচালিত করার একটি উপকরণ। তাই আগের শীতকালের ‎কথা স্মরণ করে বুঝা দরকার যে, সময় কতো তাড়াতাড়ি অতিবাহিত হচ্ছে; সুতরাং ‎আগের ভুলভ্রান্তি সংশোধন করে নতুনভাবে ভালো পন্থায় জীবনযাপন করার প্রতি ‎উৎসাহিত হওয়া দরকার। ‎

‎ মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ أَرَادَ أَن يَذَّكَّرَ أَوْ أَرَادَ شُكُورًا)، سورة الفرقان، الآية 62. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ:‎‏ ‏‎“প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহই দিবারাত্রিকে ‎পরস্পরের প্রতিনিধি করে সৃষ্টি করেছেন; তাঁরই সেই সমস্ত মানুষের জন্য, যারা এর ‎দ্বারা তাঁর উপদেশ মেনে চলার ইচ্ছা রাখে কিংবা তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ইচ্ছা ‎রাখে। সুতরাং দিনের বেলায় কোনো সৎ কর্ম ছুটে গেলে সেটাকে রাতের বেলায় তারা ‎সম্পাদন করে নিবে এবং রাতের বেলায় কোনো সৎ কর্ম ছুটে গেলে সেটাকে তারা ‎দিনের বেলায় সম্পাদন করে নিবে”। ‎ ‎(সূরা আল ফুরকান, আয়াত নং ৬২)।‎ ওমার ইবনুল খাত্তাব [রাদিয়াল্লাহু আনহু] বলেছেন: “দিনের বেলায় তোমার কোনো সৎ ‎কর্ম ছুটে গেলে সেটাকে রাতের বেলায় সম্পাদন করে নিবে। মহান আল্লাহই ‎দিবারাত্রিকে পরস্পরের প্রতিনিধি করে সৃষ্টি করেছেন। যারা এর দ্বারা মহান আল্লাহর ‎উপদেশ মেনে চলার ইচ্ছা রাখে কিংবা তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার ইচ্ছা রাখে।

শীতকাল হলো প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর প্রদত্ত নিয়ামত ও ‎আরামদায়ক গরম পশমী পোশাক এবং আরামদায়ক গরম যন্ত্রপাতি ইত্যাদির শুকরিয়া ‎বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার একটি সুবর্ণ সুযোগ। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের ‎মধ্যে বলেছেন:‎ ‏ (وَالْأَنْعَامَ خَلَقَهَا لَكُمْ فِيهَا دِفْءٌ وَمَنَافِعُ وَمِنْهَا تَأْكُلُونَ)، سورة النحل، الآية 5. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ তোমাদের জন্য ‎গবাদিপশু বা গৃহপালিত পশুকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেগুলিকে তোমাদের অধীনে ‎করে দিয়েছেন এবং তিনি তোমাদের জন্য সেগুলির পশম ও চুলের কাপড় তৈরি করার ‎ব্যবস্থা করেছেন। আর সেগুলিকে তোমাদের শীত নিবারক পোশাকের উপকরণ ও ‎নানাবিধ কল্যাণের উপাদান হিসেবে নির্ধারিত করেছেন। এবং অনেক গবাদিপশু বা ‎গৃহপালিত পশুকে তোমাদের খাবারের উপযোগী করেছেন। তাই তোমরা সেগুলির ‎মাংস ভক্ষণ করছো”। (সূরা আন্নাহল, আয়াত নং ৫)। ‎ সুতরাং এই সমস্ত নিয়ামতের শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা অপরিহার্য কর্তব্য। ‎তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ)، سورة إبراهيم، الآية 7. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “স্মরণ করো! তোমাদের প্রতিপালক যখন ঘোষণা করেছিলেন, ‎অবশ্যই আমি তোমাদেরকে অনেক নেয়ামত বা অনুগ্রহ প্রদান কররো, যদি তোমরা ‎আমার প্রদত্ত নিয়ামতের শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো আমার আনুগত্যের ‎মাধ্যমে। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, তাহলে আমার শাস্তি খুবই কঠিন। সুতরাং ‎আমি আমার নেয়ামত বা অনুগ্রহ তেমাদের কাছ থেকে বিলীন করে দিবো এবং ‎তোমাতের উপযোগী শাস্তি তোমাদেরকে প্রদান করবো”। (সূরা ইবরাহীম, আয়াত নং ‎৭)। ‎

শীতকাল হলো পরকালকে স্মরণ করার সুযোগ।

প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে কতকগুলি শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। আর এই শিক্ষণীয় বিষয়গুলি আল্লাহর ‎বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর হাদীস থেকে নিতে ‎পারি। আর সেই হাদীসটি হলো এই যে, আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ ‎‎[সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “জাহান্নাম তাঁর প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য ‎মহান প্রতিপালক আল্লাহর কাছে অভিযোগ করে বলেছে: হে আমার প্রতিপালক! আমার ‎এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলেছে। তখন তিনি তাকে দুটি নিঃশ্বাস ছাড়ার অনুমতি ‎প্রদান করেন। একটি নিঃশ্বাস শীতকালে আর অন্যটি নিঃশ্বাস গ্রীষ্মকালে। অতএব তোমরা ‎গ্রীষ্মকালে যে গরমের তীব্রতা পেয়ে থাকো, তা হলো জাহান্নামের নিঃশ্বাসের প্রভাব। আর ‎তোমরা শীতকালে যে সব প্রচণ্ড ঠাণ্ডার তীব্রতা পেয়ে থাকো, তা হলো জাহান্নামের নিঃশ্বাসের ‎প্রভাব”। (বুখারি 3260, মুসলিম 617)। ‎

এবং জাহান্নামীদেরকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার দ্বারা শাস্তি দেওয়া হবে যেমন তাদেরকে তীব্র ‎আগুনের তাপের দ্বারাও শাস্তি দেওয়া হবে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে ‎বলেছেন:‎ ‏(لَا يَذُوقُونَ فِيهَا بَرْدًا وَلَا شَرَابًا. إِلَّا حَمِيمًا وَغَسَّاقًا. جَزَاءً وِفَاقًا)، سورة النبأ، الآيات 24-26.‏ ভাবার্থের অনুবাদ:‎‏ ‏‎“জাহান্নামীরা জাহান্নামে না পাবে আরামদায়ক কোনো ঠাণ্ডা জিনিস ‎আর না পাবে তৃষ্ণা নিবারণকারী পানীয় দ্রব্য। ওরা পান করবে সেখানে দুর্গন্ধময় ফুটন্ত ‎গরম পানি এবং তাতে থাকবে তাদের পুঁজ থেকে নির্গত দূষিত রক্ত। আর পান করবে ‎তারা প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পানীয় দ্রব্য, যা সহ্য করতে পারবে না তারা। এটি হবে তাদের ‎পাপের উপযুক্ত প্রতিফল”। [সূরা নাবা: 24-26]‎ জাহান্নামীরা জাহান্নামে এমন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা জিনিস পাবে, যে তারা সেই প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ‎জিনিসেই জ্বলে যাবে। জাহান্নামীরা আবার প্রচণ্ড গরমের তীব্রতা থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য সাহায্য চায়বে, ‎তখন তাদেরকে এমন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা বাতাস প্রদান করা হবে যে, সেই প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ‎বাতাসে তাদের হাড় ফেটে যাবে। তাই তারা আবার জাহান্নামের আগুনের তাপ চাইবে। ‎‎.. আমরা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা ও মঙ্গল কামনা ‎করছি। ‎

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কোনো উপাসক বলেছেন: আমি যখন ‎তুষারপাত দেখতে পাই, তখন সেই কিয়ামতের দিনে আমলনামা ছড়িয়ে যাওয়ার কথা ‎স্মরণ করি, যে কিয়ামতের দিনে সবাই একত্রিত হবে এবং সবাই সব দিকে ছড়িয়ে ‎যাবে। ‎

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন