শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করা

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করা হলো তাঁর একমাত্র উপাস্য ‎হওয়া বা তাঁর উলুহিয়াতের প্রতি ইমান স্থাপনের বিপরীত কর্ম। আর এটিই হলো সব চেয়ে ‎বড়ো ও জঘন্য পাপ। আর এই অনুচ্ছেদে আপনি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর ‎অংশীদার স্থাপন করার অর্থ ও তার ধ্বংসাত্মক পরিণতি এবং তার বিভাগসমূহ জানতে ‎পারবেন। ‎

  • প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করার অর্থ জানা।
  • প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করার ধ্বংসাত্মক পরিণতির জ্ঞান লাভ করা।
  • প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করার বিভাগসমূহ জানা।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর শরীক বা অংশীদার স্থাপন করার অর্থ

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কর্তৃত্বে ও প্রভুত্বে অথবা তাঁর উপাসনার ক্ষেত্রে কিংবা তাঁর নাম ও গুণাবলির বিষয়ে কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে তাঁর শরীক বা অংশীদার স্থাপন করাকে শিরক বলা হয়।

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর শরীক বা অংশীদার স্থাপন করার কতকগুলি উদাহরণ:

١
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কর্তৃত্বে ও প্রভুত্বে শরীক বা অংশীদার স্থাপন করার উদাহরণ: যেমন কোনো ব্যক্তি এই বলে দাবি করছে যে, প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তি মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করেছে। অথবা মহাবিশ্বের পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর সাথে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির কর্তৃত্ব বা অংশ আছে।
٢
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর উপাসনার ক্ষেত্রে শরীক বা অংশীদার স্থাপন করার উদাহরণ: যেমন কোনো ব্যক্তি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির উপাসনা করছে। অথবা এমন বিষয়ে তার কাছে কোনো আকাঙ্ক্ষিত বিষয় অর্জন করার জন্য তাকে আহ্বান করছে বা তার কাছে প্রার্থনা করছে, যে বিষয়ে মহান আল্লাহ ছাড়া কেউ সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে না।
٣
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর নাম ও গুণাবলির বিষয়ে শরীক বা অংশীদার স্থাপন করার উদাহরণ: যেমন কোনো ব্যক্তি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টি জগতের বা এই মহাবিশ্বের কোনো বস্তু বা ব্যক্তির সাথে তুলনা করছে।

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করার ভয়াবহতা

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করা হলো তাঁর একমাত্র উপাস্য হওয়া বা তাঁর উলুহিয়াতের প্রতি ইমান স্থাপনের বিপরীত কর্ম। অতএব যেমন প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর একমাত্র উপাস্য হওয়া বা তাঁর উলুহিয়াতের প্রতি ইমান স্থাপন করা এবং কেবলমাত্র তাঁরই উপাসনা বা ইবাদত করা হলো সব চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও সব চেয়ে বেশি বড়ো কর্তব্য, তেমনি তাঁর অংশীদার স্থাপন করা হলো তাঁর নিকটে সব চেয়ে বেশি জঘন্য ও ঘৃণিত পাপ। আর এটিই কেবলমাত্র সেই পাপ যে, মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা ছাড়া এই পাপের কোনো ক্ষমা নেই। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ (إِنَّ اللهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاء)، سورة النساء، جزء من الآية 48. ভাবার্থের অনুবাদ: “প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করার পাপ ব্যতীত যে কোনো ব্যক্তির যে কোনো পাপকে তিনি তওবা ছাড়াই ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দিবেন”। (সূরা আন নিসা, আয়াত নং ৪৮ এর অংশবিশেষ)। তাই হাদীসের মধ্যে এসেছে: سُئل رسول الله صلى الله عليه وسلم: "أيُّ الذَّنْبِ عِنْدَ اللَّهِ أكْبَرُ؟ قالَ: أنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا وهو خَلَقَكَ". (صحيح البخاري، رقم الحديث 4761، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 142 - (85)،). অর্থ: আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো যে, সব চেয়ে বেশি জঘন্য ও ঘৃণিত পাপ কী? তখন তিনি বলেছিলেন: “তুমি সেই প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করবে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। এটাই হলো সব চেয়ে বেশি জঘন্য ও ঘৃণিত পাপ”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৭৬১ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪২ - (৮৫), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার স্থাপন সমস্ত প্রকারের ইপাসনা ও সৎ কর্মকে বিফল ও বাতিল করে । তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ (وَلَوْ أَشْرَكُوْا لَحَبِطَ عَنْهُم مَّا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ)، سورة الأنعام، جزء من الآية 88. ভাবার্থের অনুবাদ: “তারা যদি আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করতো, তাহলে তাদের সমস্ত আমল নিষ্ফল হয়ে যেতো”। (সূরা আল আনআম, আয়াত নং 88 এর অংশবিশেষ)।

যে ব্যক্তি আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করার পর তওবা না করে মৃত্যুবরণ করবে, সে ব্যক্তি জাহান্নামে বা নরকে যাবে। জান্নাত বা স্বর্গ তার জন্য হারাম করা হয়েছে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (إِنَّهُ مَن يُّشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ)، سورة المائدة، جزء من الآية 72. ভাবার্থের অনুবাদ: “আসলে যে ব্যক্তি আল্লাহর অংশীদার স্থাপন করবে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত বা স্বর্গ নিষিদ্ধ করে দিবেন। জাহান্নাম বা নরক হবে তার বাসস্থান”। (সূরা আল মায়িদা, আয়াত নং ৭২ এর অংশবিশেষ)।

শির্ক হলো কয়েক প্রকার

١
প্রথম প্রকার হলো বড়ো শির্ক।
٢
দ্বিতীয় প্রকার হলো ছোট শির্ক।

১। প্রথম প্রকার বড়ো শির্ক

প্রথম প্রকার বড়ো শির্ক হলো এই যে, কোনো ব্যক্তি কোনো উপাসনা বা ইবাদত মহান আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির জন্য সম্পাদন করবে। সুতরাং মহান আল্লাহ যে সকল উপাসনা বা ইবাদত ও কথা এবং কাজকে ভালবাসেন, সে সকল উপাসনা বা ইবাদত ও কথা এবং কাজকে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির জন্য সম্পাদন করাই হলো শির্ক ও কুফুর অথবা আল্লাহকে বা তাঁর শিক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করা। বড়ো শির্কের দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যেতে পারে যে, মহান আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির নিকটে আরোগ্য লাভ করার জন্য প্রার্থনা করা বা জীবিকায় অথবা জীবিকানির্বাহে প্রশস্ততা চাওয়া। তদ্রূপ মহান আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির উপরে ভরসা রাখা এবং সেই রূপ মহান আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির জন্য নামাজ পড়া বা জবাই করা ইত্যাদি।

١
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُوْنِيْ أَسْتَجِبْ لَكُمْ) سورة غافر، (المؤمن)، الآية 60.‏‎ ‎ ভাবার্থের অনুবাদ: “আর হে সকল জাতির মানব সমাজ! তোমাদের ‎প্রকৃত প্রতিপালক সত্য উপাস্য সৃষ্টিকর্তা এক ও অদ্বিতীয় মহান আল্লাহ ‎বলেন: তোমরা আমার নিকটে একত্ববাদ বজায় রেখে আমার উপাসনার ‎সহিত প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের প্রার্থনা কবুল করবো”। (সূরা ‎গাফির (আলমুমিন), আয়াত নং ৬০ এর অংশবিশেষ)।
٢
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(وَعَلَى اللهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ)، سورة المائدة، جزء من الآية 23.‏‎ ‎ ভাবার্থের অনুবাদ: “মহান আল্লাহর উপর নির্ভর করো, যদি তোমরা সত্যিই ‎ইমানদার মুসলিম সমাজ হয়ে থাকো”। ‎(সূরা আল মায়িদা, আয়াত নং ২৩ এর অংশবিশেষ)।‏ ‏
٣
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ) سورة الكوثر، الآية 2.‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “হে বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! তুমি তোমার প্রকৃত প্রভু ‎কেবলমাত্র মহান আল্লাহর জন্যই একনিষ্টতার সহিত নামাজ পড়ো এবং ‎কুরবানি করো”। (সূরা আল ‎কাওসার‎, আয়াত নং ২)।

মহান আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির কাছে এইভাবে ‎প্রার্থনা বা দোয়া করা এবং এই ধরণের কর্ম ইত্যাদি সম্পাদন করাই ‎হলো শির্ক ও কুফুর অথবা আল্লাহকে বা তাঁর শিক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করা। ‎যেহেতু আরোগ্য করা, জীবিকা অথবা জীবিকানির্বাহকে প্রশস্ত করা মহান ‎আল্লাহর তাওহীদুর রুবুবিয়া বা মহান আল্লাহর প্রভুত্বের ও প্রকৃত ‎প্রতিপালক হওয়ার বৈশিষ্ট্য এবং মহান আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং ‎তাঁর জন্য নামাজ পড়া ও জবাই করা হলো মহান আল্লাহর একমাত্র সত্য ‎উপাস্য হওয়া বা তাঁর উলুহিয়াতের বা তাঁর একমাত্র সত্য উপাস্য হওয়া ‎অথবা তাঁর উলুহিয়াতের বৈশিষ্ট্য।

২। দ্বিতীয় প্রকার ছোট শির্ক ‎

দ্বিতীয় প্রকার ছোট শির্ক হলো এই যে, যে সব কথা এবং কাজ বড়ো ‎শির্কের মাধ্যম বা কারণ হতে পারে, সেই সব কথা এবং কাজকে ছোট ‎শির্ক বলা হয়। ‎

ছোট শির্কের কতকগুলি দৃষ্টান্ত

١
লোক দেখানোর জন্য বা প্রদর্শনের জন্য প্রকৃত ইসলাম ধর্মের কর্ম ‎সম্পাদন করাকে রিয়াকারী বলা হয়। আর রিয়াকারী হলো ছোট শির্ক। ‎এর উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে: যেমন:- কোনো প্রকৃত মুসলিম ‎ব্যক্তি দীর্ঘ করে নামাজ পড়ছে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কিংবা পবিত্র ‎কুরআন পাঠ করছে অথবা মহান আল্লাহর জিকির করছে লোককে শুনিয়ে ‎শুনিয়ে তাদের প্রশংসা লাভের উদ্দেশ্যে। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী ‎মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:‎ ‏"إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ الشِّرْكُ الْأَصْغَرُ"، قَالُوا: وَمَا الشِّرْكُ الْأَصْغَرُ يَا رَسُوْلَ ‏اللهِ؟ قَالَ: "الرِّيَاءُ". (أحمد 23630).‏ অর্থ: “যে বিষয়ে আমি তোমাদের প্রতি সবচেয়ে বেশি ভয় করছি, সে ‎বিষয়টি হলো ছোট শির্ক”। সাহাবীগণ [রাদিয়াল্লাহু আনহুম] বললেন: হে ‎আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল! ছোট শির্ক কী? তিনি বললেন: “ছোট শির্ক হলো ‎লোক দেখানোর জন্য বা প্রদর্শনের জন্য প্রকৃত ইসলাম ধর্মের কর্ম ‎সম্পাদন করা” (মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ২৩৬৩০)। ‎
٢
তাওহীদ বা একত্বের পরিপূর্ণতার বিপরীত কথাবার্তা বলা ছোট শির্কের ‎মধ্যে পড়ছে: যেমন:- কোনো প্রকৃত মুসলিম ব্যক্তি মহান আল্লাহকে বাদ ‎দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির শপথ করে। সুতরাং সে বলে: তোমার ‎জীবনের শপথ অথবা নাবীর কসম ইত্যাদি। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল ‎বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এই ধরণের শপথ করা ‎হতে অথবা কসম খাওয়া হতে সতর্ক করেছেন এবং বলেছেন:‎ ‏"مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللهِ؛ فَقَدْ أَشْرَكَ". ‏ ‏(سنن أبي داود، رقم الحديث 3251، وجامع الترمذي، رقم الحديث ‏‏1535، واللفظ لأبي داود، وصححه الألباني).‏ অর্থ: “যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে শপথ করবে, সে ব্যক্তি ‎র্শিকের পাপে পতিত হবে”। ‎ ‎[সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৩২৫১, এবং জামে’ তিরমিযী, হাদীস নং ‎১৫৩৫, তবে হাদীসের শব্দগুলি সুনান আবু দাউদ থেকে নেওয়া হয়েছে, ‎আল্লামা মুহাম্মাদ নাসেরুদ্দিন আল্আল্বাণী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন]।

মানুষের কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করা বা তার কাছে কিছু চাওয়া কী শির্ক ‎হবে?‎

প্রকৃত ইসলাম ধর্ম এসেছে মানুষের বুব্ধিকে কুসংস্কার ও ভণ্ডামি থেকে মুক্ত করার ‎জন্য এবং প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে ‎আত্মসমর্পণ করা থেকে মুক্ত করার জন্য। সুতরাং মৃত ব্যক্তির কাছে অথবা জড় ও ‎অচেতন পদার্থের কাছে কিছু চাওয়া, তার কাছে আত্মসমর্পণ করা এবং তার সামনে ‎বিনয়ী হওয়া কোনো সময় বৈধ বা জায়েজ নয়। ‎ তবে কোনো উপস্থিত ক্ষমতাবান জীবিত ব্যক্তির কাছে কোনো বিষয়ে কিছু সাহায্য ‎চাওয়া অথবা তার কাছে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য সহায়তা চাওয়া কিংবা ‎তাকে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে বলা ‎নিঃসন্দেহে বৈধ বা জায়েজ।

জড় ও অচেতন পদার্থের কাছে অথবা মৃত ব্যক্তির কাছে কিছু সাহায্য চাওয়া বা ‎সহায়তা প্রার্থনা করার বিষয়। ‎

জড় ও অচেতন পদার্থের কাছে অথবা মৃত ব্যক্তির কাছে কিছু সাহায্য চাওয়া বা ‎সহায়তা প্রার্থনা করা হলো প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর অংশীদার ‎স্থাপন করা। আর এই আচরণটি হলো বুব্ধি, প্রকৃত ইসলাম ধর্ম এবং প্রকৃত ‎সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর প্রতি সঠিক ইমান বা বিশ্বাস স্থাপনের বিপরীত ‎ও পরিপন্থী কর্ম। কেননা জড় ও অচেতন পদার্থ এবং মৃত ব্যক্তির কাছে সাহায্য ‎চাওয়া বা সহায়তা প্রার্থনা করার বিষয়টি তারা শ্রবণ করার ক্ষমতা রাখে না এবং ‎সাহায্য বা সহায়তা করারও ক্ষমতা রাখে না। যেহেতু সাহায্য চাওয়া বা সহায়তা ‎প্রার্থনা করার বিষয়টি হলো আসলে একটি উপাসনা বা ইবাদত। আর যে কোনো ‎উপাসনা বা ইবাদত হলো প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর প্রকৃত ‎প্রাপ্য। তাই কোনো উপাসনা বা ইবাদত প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান ‎আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির জন্য সম্পাদন করাই হলো ‎শির্ক ও কুফুর অথবা আল্লাহকে বা তাঁর শিক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করা। বিশ্বনাবী ‎মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন মহান আল্লাহর বার্তাবহ ‎রাসূল হিসেবে আগমন করেনে, তখন আরব জাতির মধ্যে জড় ও ‎অচেতন পদার্থের কাছে অথবা মৃত ব্যক্তির কাছে সাহায্য চাওয়া বা ‎সহায়তা প্রার্থনা করার শির্ক বিরাজমান ছিলো। ‎

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন