শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় তাওহীদুল উলূহিয়্যার প্রতি ইমান বা বিশ্বাস স্থাপন করা। অর্থাৎ: সমস্ত ইবাদত বা উপাসনার ক্ষেত্রে সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর একত্ব বা তাওহীদ প্রতিষ্ঠিত করার প্রতি ইমান বা বিশ্বাস স্থাপন করা।

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ সত্য উপাস্য। তিনি ছাড়া সমস্ত উপাস্য হলো বাতিল। ‎এই অনুচ্ছেদে আপনি তাওহীদুল উলূহিয়্যার সঠিক অর্থ ও গুরুত্ব জানতে পারবেন। ‎

 

  • তাওহীদুল উলূহিয়্যার প্রতি ইমান বা বিশ্বাস স্থাপনের জ্ঞান লাভ করা।
  • তাওহীদুল উলূহিয়্যার প্রতি ইমান বা বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্বের জ্ঞান লাভ করা।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

তাওহীদুল উলূহিয়া বা সর্বপ্রকার ইবাদত বা উপাসনা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য সম্পাদন করার অর্থ।

এইভাবে দৃঢ় ইমান বা দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা যে, প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহই কেবলমাত্র সমস্ত প্রকার প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য উপাসনার ন্যায্য অধিকারী। সুতরাং আমরা সমস্ত প্রকারের উপাসনা শুধুমাত্র তাঁরই জন্য সম্পাদন করবো। অতএব দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যেতে পারে যে, প্রার্থনা করা, উপাসনার ভয় করা, আস্থা ও ভরসা রাখা, সাহায্য চাওয়া, নামাজ পড়া, জাকাত প্রদান করা এবং রোজা রাখা ইত্যাদি সবকিছুই প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর জন্যই সম্পাদন করবো। যেহেতু প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (وَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَّاحِدٌ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيْمُ)، سورة البقرة، الآية 163. ভাবার্থের অনুবাদ: হে সকল জাতির মানব সমাজ! যিনি তোমাদের উপাসনার প্রকৃত অধিকারী ও যথোপযোগী, তিনি হলেন এক ও অদ্বিতীয় প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান প্রতিপালক আল্লাহ; তাই তোমরা তাঁকে ছেড়ে অন্যের উপাসনা করো না এবং তাঁর সাথে কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে শরীক বা অংশীদার করো না, কেননা তোমরা তোমাদের উপাসনায় যে বস্তু বা ব্যক্তিকে তাঁর সাথে শরীক বা অংশীদার করছো, সে বস্ত বা ব্যক্তি তো আসলে সেই এক ও অদ্বিতীয় প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান প্রতিপালক আল্লাহর সৃষ্টি তোমাদের মতোই। সুতরাং তোমরা তোমাদের প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান প্রতিপালক আল্লাহর উপাসনা করো; তিনি এক ও অদ্বিতীয় এবং তাঁর কোনো সমতুল্য নেই। তিনি মহাবিশ্বের সকলের জন্য অনন্ত করুণাময় এবং প্রকৃত ইমানদার মুসলিম জাতির জন্য পরম দয়ালু”। (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ১৬৩)।

সুতরাং প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান সতর্ক করে সকল জাতির মানব সমাজকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, প্রকৃত উপাস্য বা আরাধ্য হলেন এক ও অদ্বিতীয় প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য মহান আল্লাহ; তাই তাঁকে ছেড়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে উপাস্য বা আরাধ্য হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয় এবং তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির উপাসনা করা বৈধ নয়।

মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে আরো বলেছেন: (إِنَّمَا إِلَٰهُكُمُ اللَّهُ الَّذِيْ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ وَسِعَ كُلَّ شَيْءٍ عِلْمًا)، سورة طه، الآية 98. ভাবার্থের অনুবাদ: “নিশ্চয় তোমাদের প্রকৃত উপাস্য কেবলমাত্র আল্লাহ, তিনি ছাড়া এমন কোনো সত্য উপাস্য নেই যার উপাসনা করা বৈধ। আর তিনিই কেবলমাত্র সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ”। (সূরা ত্বাহা, আয়াত নং ৯৮)।

তাওহীদুল উলূহিয়া বা সর্বপ্রকার ইবাদত বা উপাসনা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য সম্পাদন করার প্রতি ইমান বা বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব।

তাওহীদুল উলূহিয়া বা সর্বপ্রকার ইবাদত বা উপাসনা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য সম্পাদন করার প্রতি ইমান বা বিশ্বাস স্থাপনের গুরুত্ব কয়েকটি বিষয়ের মাধ্যমে প্রকাশ পায়:

১। সমস্ত জিন জাতির এবং সমস্ত মানব জাতির সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহরই শুধুমাত্র উপাসনা করা।

সুতরাং শুধুমাত্র এক ও অদ্বিতীয় প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহরই উপাসনা করার জন্য সমস্ত জিন জাতিকে এবং সমস্ত মানব জাতিকে সৃষ্টি করা হয়েছে। যেহেতু এক ও অদ্বিতীয় প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কোনো শরীক বা অংশীদার নেই। তাই আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ)، سورة الذاريات، الآية 56. ভাবার্থের অনুবাদ: “আর আমি সমগ্র জিনজাতিকে ও সমগ্র মানবজাতিকে এই জন্য সৃষ্টি করেছি যে, তারা যেন আমার একত্বের প্রতি বিশ্বাস রেখে কেবলমাত্র আমারই উপাসনা করে”। (সূরা আজ্জারিয়াত, আয়াত নং 56)।

২। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহরই শুধুমাত্র উপাসনা করার বিষয়টিকে সাব্যস্ত করার জন্য সমস্ত বার্তাবহ রাসূল [আলাইহিমুস সালাম] কে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বার্তাবহ রাসূলগণ [আলাইহিমুস সালাম] এর মাধ্যমে ঐশীবাণীর সমস্ত গ্রন্থ বা আসমানি কিতাবসমূহ অবতীর্ণ করা হয়েছে এই উদ্দেশ্যে যে, মানুষ যেন স্বীকৃতি দেয় এবং স্বীকার করে যে, প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য কেবলমাত্র মহান আল্লাহ আর তাঁকে বাদ দিয়ে যে সমস্ত বস্তু বা ব্যক্তির উপাসনা করা হয় তা সর্বতোভাবে প্রত্যাখ্যান করে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُوْلًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوْتَ)، سورة النحل، جزء من الآية 36. ভাবার্থের অনুবাদ: “আর আমি যুগে যুগে প্রত্যেক জাতির প্রতি বার্তাবহ রাসূল প্রেরণ করেছি; একটি বার্তা প্রচার করার জন্য, আর সেই বার্তাটি হলো: হে সকল জাতির মানব সমাজ! তোমরা কেবলমাত্র তোমাদের প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর উপাসনা করো এবং তাঁর উপাসনা ছাড়া অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তি কিংবা অপশক্তির উপাসনা পরিত্যাগ করো”। [সূরা আন নাহাল, আয়াত নং 36 এর অংশবিশেষ)।

৩। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহরই শুধুমাত্র উপাসনা করার বিষয়টি হলো সমগ্র মানবজাতির সর্বপ্রথম অপরিহার্য কর্তব্য ও করণীয় কাজ।

আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মোয়াজ বিন জাবাল [রাদিয়াল্লাহু আনহু] কে ইয়েমেন দেশে প্রেরণ করার সময় বলেছিলেন: "إنَّكَ سَتَأْتي قَوْمًا أهْلَ كِتَابٍ، فَإِذَا جِئْتَهُمْ؛ فَادْعُهُمْ إلى أنْ يَشْهَدُوا أنْ لا إلَهَ إلَّا اللَّهُ، وأنَّ مُحَمَّدًا رَسولُ اللَّهِ". (صحيح البخاري، رقم الحديث 1496، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 29 - (19)،). অর্থ: ‘‘তুমি এমন এক জাতির কাছে যাচ্ছো যে, তারা খ্রিস্টান ধর্মের অবলম্বী। তাই তুমি যখন তাদের কাছে যাবে তখন সর্ব প্রথমে তাদেরকে যে বিষয়ের প্রতি আহ্বান করবে তা হলো এই যে, তারা যেন এই বলে সাক্ষ্য প্রদান করে যে, “প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য এক ও অদ্বিতীয় মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই আর মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল”। অর্থাৎ তুমি তাদেরকে জানিয়ে দিবে: তারা যেন সমস্ত প্রকারের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য উপাসনা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য এক ও অদ্বিতীয় মহান আল্লাহর জন্য সম্পাদন করে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৯৬ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৯ -(১৯), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।

৪। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহই কেবলমাত্র সমস্ত প্রকার উপাসনার ন্যায্য অধিকারী হওয়ার প্রতি দৃঢ় ইমান বা দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করাই হলো: "لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ". “লাইলাহা ইল্লাল্লাহ” অর্থ: “আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো প্রকৃত উপাস্য নেই”। এর আসল তাৎপর্য।

সুতরাং আলইলাহ শব্দের অর্থ হলো উপাস্য, মাবুদ আরাধ্য। অতএব প্রকৃত উপাস্য শুধুমাত্র মহান আল্লাহ। তাই আমরা তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো বস্তু বা ব্যক্তির জন্য কোনো উপাসনা সম্পাদন করবো না।

৫। কেবলমাত্র প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহকে সমস্ত প্রকার উপাসনার ন্যায্য অধিকারী হওয়ার প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করার বিষয়টি হলো: তাঁকে মহাবিশ্বের সমস্ত বস্তুর প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা, প্রকৃত অধিপতি এবং প্রকৃত পরিচালক হিসেবে অটলভাবে মেনে নেওয়ার সঠিক পরিণতি ও সঠিক পরিণাম।

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন