মডেল: বর্তমান বিভাগ
পাঠ্য বিষয় আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি ইমান
বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি আমাদের কতকগুলি দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিত রয়েছে, সেই সব নির্ধারিত দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ছে:
১। আমরা আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি এই ভাবে ইমান রাখি যে, তিনি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি ও তাঁর বার্তাবহ রাসূল বা পয়গম্বর। তিনি পৃথিবীর প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত মানবজাতির মধ্যে সর্বপ্রধান ও সর্বশ্রেষ্ঠ শিরোমণি। তিনিই প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর সর্বশেষ বার্তাবহ রাসূল ও সর্বশেষ নাবী। সুতরাং তাঁর পরে পৃথিবীর বুকে আর কোনো নাবী বা বার্তাবহ রাসূলের আগমন বা আবির্ভাব ঘটবে না। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর বার্তা তিনি সম্পূর্ণরূপে প্রচার করেছেন এবং তাঁর আমানত যথাযথভাবে পরিপূর্ণভাবে বিশ্ববাসীকে প্রদান করেছেন ও তার সংরক্ষণ করেছেন। তিনি সকল জাতির মানব সমাজের কল্যাণদায়ক কর্ম সম্পাদন করেছেন ও তাদেরকে মঙ্গলদায়ক শিক্ষা প্রদান করেছেন। আর তিনি পৃথিবীর সকল জাতির মানব সমাজকে তাদের প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর একত্বের প্রতি বা তাওহীদের প্রতি আহ্বানের কাজে নিরলস প্রচেষ্টা করেছেন এবং সংগ্রাম করে প্রবল বিরোধিতার মুখে টিকে থেকেছেন ও ধৈর্য ধারণের প্রতিযোগিতা করেছেন এবং ধৈর্যশীল হয়েছেন।
২। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যে সমস্ত সংবাদ প্রদান করেছেন, সে সমস্ত সংবাদকে আমরা সত্য বলে বিশ্বাস করবো। তিনি যে বিষয়ে উপদেশ প্রদান করেছেন, সে বিষয়ের উপদেশ আমরা মেনে চলবো। এবং তিনি যে বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, সে বিষয়ের নিষেধাজ্ঞা আমরা মেনে চলবো। আর তাঁর বিনিবারিত বিষয়াদি হতে বা তাঁর নিষেধকৃত বিষয়াদি হতে বিরত থাকবো। তাঁর প্রদত্ত নিয়ম পদ্ধতি মোতাবেক প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর ইবাদত বা উপাসনা করবো। এবং আমরা আমাদের জীবন পরিচালিত করার ক্ষেত্রে তাঁকেই মেনে চলবো ও তাঁরই অনুসরণ করবো। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيْرًا)، سورة الأحزاب، الآية 21. ভাবার্থের অনুবাদ: “যারা আল্লাহর করুণার আশা রাখে এবং মৃত্যুবরণ করার পরে পরকালে সুখশান্তিপূর্ণ মঙ্গলময় জীবন লাভের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদের জীবনযাত্রার প্রণালীর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ”। (সূরা আল আহযাব, আয়াত নং ২১)।
৩। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর ভালোবাসাকে মাতাপিতা, সন্তানসন্ততি এবং অন্য সকল মানুষের ভালোবাসার উপরে প্রাধান্য দেওয়া অপরিহার্য। তাই আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ؛ حَتَّى أَكُوْنَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِن وَّالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ". (صحيح البخاري، رقم الحديث 15، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 70- (44)، ). অর্থ: “তোমাদের মধ্যে থেকে কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকৃত ঈমানদার মুসলিম হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকটে তার পিতা, সন্তানসন্ততি এবং অন্য সকল মানুষ অপেক্ষা অধিক প্রিয় না হবো”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭০ -(৪৪), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে] । আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রকৃত ভালোবাসা সাব্যস্ত হয় তাঁর প্রদত্ত শিক্ষার সঠিক অনুকরণ ও তাঁর প্রদত্ত জীবনবিধানের সঠিক অনুসরণের মাধ্যমে। প্রকৃত সুখশান্তি এবং প্রকৃত মঙ্গলময় পরিপূর্ণ জীবন লাভের পথ হলো আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সঠিকভাবে আনুগত্য করা। তাই এই বিষয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে আরো বলেছেন: (وَإِنْ تُطِيْعُوْهُ تَهْتَدُوْا وَمَا عَلَى الرَّسُوْلِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِيْنُ )، سورة النور، جزء من الآية 54. ভাবার্থের অনুবাদ: “হে সকল জাতির মানব সমাজ! তোমরা যদি মহান আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর আহ্বান গ্রহণ করে নিয়ে তার অনুসরণ করো, তাহলে তোমরা জান্নাত বা স্বর্গ লাভের সঠিক পথ প্রকৃত ইসলামের সত্য অনুগামী হতে পারবে। অতঃপর তোমরা যদি এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করো, তাহলে জেনে রাখো যে, বিশ্বনাবী মুহাম্মাদের উপর প্রকৃত ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে। আর তোমাদের উপর তার আহ্বান গ্রহণ করার দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে। তাই তোমরা যদি বিশ্বনাবী মুহাম্মাদের অনুসরণ করো, তাহলে তোমরা জান্নাত বা স্বর্গ লাভের পথ প্রকৃত ইসলামের সঠিক পন্থায় অনুগামী হতে পারবে। এবং তাঁর দায়িত্ব হলো: কেবল সুস্পষ্টরূপে লোকের মধ্যে এমন পন্থায় প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা প্রচার করা, যে সেই পন্থায় লোক সহজে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা অনুধাবন ও উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়”। (সূরা আন নূর, আয়াত নং 54 এর অংশবিশেষ)।
৪। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পক্ষ থেকে আনীত ও উপস্থাপিত সমস্ত বিষয় ও সমস্ত শিক্ষা গ্রহণ করা আমাদের প্রতি ওয়াজিব বা অপরিহার্য। আর সেইগুলিকে মেনে চলা বা বাস্তবায়িত করা ও সেইগুলির অতিশয় সম্মান ও শ্রদ্ধা বা ভক্তি করা আমাদের মহা কর্তব্য। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُوْنَ حَتَّى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوْا فِيْ أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا)، سورة النساء، الآية 65. ভাবার্থের অনুবাদ: “হে বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! তোমার প্রতিপালকের শপথ! যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের বিরোধ নিষ্পত্তির ভার তোমার উপর ন্যস্ত না করবে এবং তোমার সিদ্ধান্ত দ্বিধাহীনভাবে সর্বান্তকরণে মেনে না নিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা প্রকৃত ইমানদার মুসলিম জাতি বলে পরিগণিত হবে না”। (সূরা আন্নিসা, আয়াত নং 65)।
৫। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করা হতে সাবধান ও সতর্ক থাকা আমাদের প্রতি ওয়াজিব বা অপরিহার্য। সুতরাং আমরা আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করা হতে সদাসর্বদা সাবধান ও সতর্ক থাকবো। কেননা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করার অর্থ হলো অমঙ্গলের পথ অবলম্বন করা এবং বিপথগামী হওয়া আর মহা শাস্তি লাভের আয়োজন করা। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيم) سورة النور، جزء من الآية 63. ভাবার্থের অনুবাদ: “অতএব যারা আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদের আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করবে, তারা এখনই সতর্ক হয়ে যাক। নচেৎ তাদেরকে গ্রাস করবে সর্ব প্রকারের অমঙ্গল এবং তাদেরকে গ্রেফতার করবে কঠিন শাস্তি”। (সূরা আন্ নূর, আয়াত নং ৬৩ এর অংশবিশেষ)।
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর রিসালাত বা বার্তার কতকগুলি এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যে সেই বৈশিষ্ট্যগুলি তাঁর পূর্বের সমস্ত বার্তাবহ রাসূলের রিসালাত বা বার্তার বৈশিষ্ট্য হতে পৃথক ও স্বতন্ত্র।
১। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এই বিষয়টি রয়েছে যে, তাঁর পূর্বের সমস্ত বার্তাবহ রাসূল বা পয়গম্বরের রিসালাত বা বার্তার তিনি হলেন সমাপ্তকারী। তাই মহান আল্লাহ তাঁর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ সম্পর্কে বলেছেন: (مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِّجَالِكُمْ وَلَكِنْ رَّسُوْلَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّيْنَ)، سورة الأحزاب، جزء من الآية 40. ভাবার্থের অনুবাদ: “বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ যে সমস্ত পুরুষকে জন্ম দেননি, তিনি তাদের প্রকৃতপক্ষে পিতা নন। কিন্তু তিনি হলেন আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল এবং সর্বশেষ নাবী বা দূত”। (সূরা আল আহযাব, আয়াত নং ৪০ এর অংশবিশেষ)।
২। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এই বিষয়টি রয়েছে যে, তাঁর রিসালাত বা বার্তা হলো তাঁর পূর্বের সমস্ত বার্তাবহ রাসূল বা পয়গম্বরের রিসালাত বা বার্তার রহিতকারী। তাই বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন থেকে আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বা দূত হিসেবে নির্ধারিত হয়েছেন, তখন থেকে কোনো মানুষের পক্ষ থেকে বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর অনুসরণের প্রকৃত ধর্ম ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম মহান আল্লাহ কবুল করবেন না। এবং তাঁর প্রকৃত ধর্ম ইসলামের সঠিক অনুসারী প্রকৃত ইমানদার মুসলিম ব্যক্তি ছাড়া কেউ জান্নাত বা স্বর্গ লাভ করতে পারবে না। যেহেতু বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মহান আল্লাহর সমস্ত বার্তাবহ রাসূল বা দূতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বার্তাবহ রাসূল বা দূত এবং তাঁর প্রকৃত অনুসারী মুসলিম জাতিও হলো সর্বোৎকৃষ্ট জাতি আর তাঁর প্রদত্ত জীবনবিধানও হলো সর্বোত্তম জীবনবিধান। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ)، سورة آل عمران، الآية 85. ভাবার্থের অনুবাদ: “আর যে ব্যক্তি প্রকৃত ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করতে চাইবে, সে জেনে রাখবে যে, তার কাছ থেকে তা কখনোই পরিগৃহীত হবে না এবং সে পরকালে সর্বহারা হয়ে চিরস্থায়ী নরক বা জাহান্নামবাসী হয়েই থাকবে”। (সূরা আল ইমরান, আয়াত নং ৮৫ এর অংশবিশেষ] । আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "وَالَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ! لَا يَسْمَعُ بِيْ أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ يَهُودِيٌّ وَّلَا نَصْرَانِيٌّ، ثُمَّ يَمُوْتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِيْ أُرْسِلْتُ بِهِ، إِلَّا كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ". (صحيح مسلم، رقم الحديث 240 - (153)، ومسند أحمد 8609 ). অর্থ: “যে সত্তার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ রয়েছে সেই সত্তার শপথ, আমি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সকল জাতির মানব সমাজের প্রতি সত্য ধর্ম প্রকৃত ইসলামসহ প্রেরিত হওয়ার পর বিশ্ববাসীর মধ্যে থেকে ইহুদি ও খ্রিস্টান ব্যক্তি হোক (অথবা অন্য কোনো ধর্মের ব্যক্তি হোক), সে যদি আমার কথা সঠিক পন্থায় শুনতে পায়, অতঃপর আমি যে সত্য ধর্ম প্রকৃত ইসলাম নিয়ে এসেছি, সেই ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করেই মৃত্যুবরণ করে, তাহলে সে পরকালে জাহান্নামবাসী হয়ে ভীষণ কষ্ট ভোগ করবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 240 - (153) এবং মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ৮৬০৯) ]।
৩। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ তাঁর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে বিশ্ববাসীর জন্য দয়া এবং কৃপা হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রেরণ করেছেন। সুতরাং বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বার্তা সমস্ত জিন জাতির জন্য এবং সমস্ত মানব জাতির জন্য নির্ধারিত রয়েছে। তাই মহান আল্লাহ জিন জাতির ভাষায় পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ الله)، سورة الأحقاف، جزء من الآية 31. ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আমাদের সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর আহ্বান গ্রহণ করো এবং প্রকৃত ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়ে যাও”। (সূরা আল আহকাফ, আয়াত নং ৩১ এর অংশবিশেষ)। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে আরো বলেছেন: (وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِّلنَّاسِ بَشِيْرًا وَّنَذِيْرًا)، سورة سبأ، جزء من الآية 28. ভাবার্থের অনুবাদ: “আর হে বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! আমি তোমাকে বিশ্বের ওই সমস্ত মানুষকে জান্নাত লাভের সুসংবাদ প্রদানকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি, যে সমস্ত মানুষ তোমার আনুগত্য করবে। আর ওই সমস্ত মানুষকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করার দুঃসংবাদ প্রদানকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি, যে সমস্ত মানুষ তোমাকে অমান্য করবে”। (সূরা সাবা, আয়াত নং ২৮ এর অংশবিশেষ)। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে এমন ছয়টি বস্তু প্রদান করা হয়েছে, যে সেই ছয়টি বস্তু আমার পূর্বের কোনো বার্তাবহ রাসূল বা নাবীকে দেওয়া হয়নি। ১। অল্পকথায় মনের ব্যাপক ভাব প্রকাশ করার ক্ষমতা আমাকে প্রদান করা হয়েছে। এবং সংকীর্ণ বাক্যে ব্যাপক অর্থ বাহক কথা বলার দক্ষতা আমাকে প্রদান করা হয়েছে। অথবা অল্প কথায় ব্যাপক অর্থ প্রকাশ করার যোগ্যতা আমাকে প্রদান করা হয়েছে। ২। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য এক ও অদ্বিতীয় মহান আল্লাহ আমাকে সাহায্য করার জন্য প্রকৃত ইসলাম ধর্ম প্রত্যাখ্যানকারী অমুসলিমদের অন্তরে আমার বিষয়ে প্রবল ভয়ের আগুন জ্বালিয়ে দেন। সুতরাং তারা আমার নাম শুনলেই তারা ভয়ে জড়সড় হয়ে যায়। ৩। আমার জন্য গনিমত বা যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু থেকে প্রাপ্ত মাল বা দ্রব্য বৈধ করা হয়েছে। আর আমার পূর্বে কোনো বার্তাবহ রাসূল বা নাবীর জন্য গনিমত বা যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু থেকে প্রাপ্ত মাল বা দ্রব্য বৈধ করা হয়নি। ৪। আমার জন্য সারা পৃথিবীকে মাসজিদ এবং সারা পৃথিবীর মাটিকে পবিত্রকারী বস্তু করে দেওয়া হয়েছে। অতএব আমার মুসলিম জাতি যেখানেই থাকুক না কেন, যখনই নামাজের সময় হয়ে যাবে, তখনই তারা পানি না থাকলেও তায়াম্মুম করে নামাজ পড়ে নিবে। ৫। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে সারা বিশ্বের সকল জাতির মানব সমাজের প্রতি তাঁর বার্তাবহ রাসূল অথবা নাবী বা দূত হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে। আর আমার পূর্বে সকল বার্তাবহ রাসূল অথবা নাবী বা দূতকে তাঁদের নির্দিষ্ট গোত্রের জন্য প্রেরণ করা হতো। ৬। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে সর্বশেষ নাবী বা দূত অথবা বার্তাবহ রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে। অতএব আমার পরে আর কোনো সত্য বার্তাবহ রাসূল অথবা সত্য কোনো নাবী বা দূত প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসবে না। সুতরাং প্রকৃত ইসলামই হলো সর্বশেষ সর্বদেশীয় সর্বজনীন এবং সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম।
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ যখনই কোনো বার্তাবহ রাসূল অথবা কোনো নাবী বা দূত এই পৃথিবীর বুকে প্রেরণ করেছেন, তখন তাঁর অনুসরণকারীদের মধ্যে সেই সমস্ত মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ করেছেন, যারা তাঁর সাহচর্য লাভ করেছিলেন ও সহায়ক ছিলেন। তাঁরা আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল অথবা নাবী বা দূতের অনুসরণকারীদের মধ্যে বা অনুগমনকারীদের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট শ্রেণির মানুষ ছিলেন। প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ মানব জাতির মধ্যে থেকে সমস্ত বার্তাবহ রাসূল ও সমস্ত নাবী বা দূতের পরেই তাঁদেরকে সর্বোত্তম মর্যাদা প্রদান করেছেন এবং তাঁর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সর্বোত্তম সঙ্গী ও সহচর এবং সহগামী নির্ধারণ করেছেন। যাতে তাঁরা প্রকৃত ইসলাম ধর্মকে বিশ্ববাসীর সামনে অতি সুন্দরভাবে এবং অতি পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতার সহিত উপস্থাপন ও প্রচার করতে পারেন। তাই আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "خَيْرأُمَّتِيْ اَلْقَرْنُ الذَّيْنَ بُعِثْتُ فِيْهِمْ، ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ". (صحيح مسلم، رقم الحديث 213-(2534)، ). অর্থ: “আমার মুসলিম জাতির মধ্যে সৰ্বোত্তম মানুষ হলো তারাই, যাদের মাঝে আমি আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল অথবা নাবী বা দূত হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। আর তারা হলেন আমার সহাবীদের শ্রেণি। তারপর তাদের পরের শ্রেণি। আর তারা হলেন তাবিঈদের সম্প্রদায়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২১৩ - (২৫৩৪)]।
সাহাবীর সংজ্ঞা
সাহাবী বলা হয় সেই ব্যক্তিকে, যে ব্যক্তি আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাথে তাঁর প্রতি ঈমানের সহিত সাক্ষাৎ করেছেন এবং সেই ঈমানের সহিত মৃত্যুবরণ করেছেন।
পবিত্র কুরআন এবং নির্ভরযোগ্য হাদীসের মধ্যে আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সহাবীদের অনেক বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদার বিবরণ উল্লিখিত হয়েছে। সেই সমস্ত বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদার বিবরণের মধ্যে রয়েছে:
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাহাবীগণ ও তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রতি আমাদের কর্তব্য।
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাহাবীগণ ও তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রতি প্রকৃত ইমানদার মুসলিম জাতির কতকগুলি কর্তব্য:
১। তাঁদেরকে ভালবাসা, তাঁদেরকে শ্রদ্ধা করা এবং তাঁদের জন্য মঙ্গল কামনা করা:
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ওই সমস্ত মুহাজির সাহাবীর প্রশংসা করেছেন, যে সমস্ত মুহাজির সাহাবী তাঁদের প্রকৃত ইসলাম ধর্মের সংরক্ষণের জন্য এবং প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিজেদের দেশ মক্কা, নিজেদের বাড়িঘর এবং অর্থ ত্যাগ করে মদিনায় এসে অবস্থান করেছিলেন। এরপর প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ মদিনার ওই সমস্ত আনসারী সাহাবীর প্রশংসা করেছেন, যে সমস্ত আনসারী সাহাবী তাঁদের সমস্ত ভাই মুহাজির সাহাবীর সকল প্রকারের সহায়তা ও সাহায্য করেছেন এবং তাঁরা নিজেদের অর্থে ও সম্পদে তাঁদেরকে অংশীদার করে নিয়েছিলেন। বরং সমস্ত আনসারী সাহাবী নিজেদের উপরে তাঁদেরকে সব দিক দিয়ে প্রাধান্য দিয়েছেন। অতঃপর তাঁদের পরে যারা কিয়ামত পর্যন্ত আসতে থাকবেন এবং প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাহাবীগণের সম্মান করবেন, তাঁদের মর্যাদা রক্ষা করবেন, তাঁদেরকে ভালোবাসবেন এবং তাঁদের জন্য সর্ব প্রকারের মঙ্গল কামনা করবেন আর তাঁদেরকে ঘৃণা বা অবজ্ঞা ও অশ্রদ্ধা করা হতে নিজেদেকে নিয়ন্ত্রিত করবেন, তাঁদেরও প্রশংসা করেছেন প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ।
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (لِلْفُقَرَاءِ الْمُهَاجِرِينَ الَّذِينَ أُخْرِجُوا مِنْ دِيَارِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ يَبْتَغُونَ فَضْلاً مِنَ اللهِ وَرِضْوَانًا وَيَنْصُرُونَ اللهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ هُمُ الصَّادِقُونَ• والَّذِينَ تَبَوَّأُوا الدَّارَ وَالإِيمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ وَلا يَجِدُونَ فِي صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِمَّا أُوتُوا وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ• والَّذِينَ جَاءُوا مِنْ بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلإخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالإِيمَانِ وَلا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلاً لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَؤُوفٌ رَحِيمٌ)، سورة الحشر، الآية 8-10. ভাবার্থের অনুবাদ: “একইভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু থেকে ফাই এর প্রাপ্ত মাল বা দ্রব্য ও সম্পদের অংশবিশেষ ওই সমস্ত অভাবী মুহাজেরদের জন্যে নির্ধারিত রয়েছে, যারা নিজেদের ঘরবাড়ি ও সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত হয়েছে, যারা আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনা করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসুল এবং প্রকৃত ইসলাম ধর্মের সাহায্যে সদাসর্বদা প্রস্তুত থাকে। এরাই হলো আসলে সত্যবাদী। আর যারা মুহাজির সাহাবীদের আগমনের পূর্বে মদীনায় বসবাস করেছিলো এবং আল্লাহ ও তাঁর রসুল এবং প্রকৃত ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিলো, তারা মুহাজির সাহাবীদেরকে ভালবাসেন এবং তাঁদেরকে যে মাল বা দ্রব্য ও সম্পদ দেওয়া হয়, তার জন্য তাঁরা তাঁদের অন্তরে কোনো প্রকারের ঈর্ষাপোষণ করেন না এবং তাঁরা অভাবগ্রস্ত হলেও মুহাজির সাহাবীদেরকে নিজেদের উপরে অগ্রাধিকার ও প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। এই ধরণের আনসারী সাহাবীদের জন্যও যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু থেকে ফাই এর প্রাপ্ত মাল বা দ্রব্য ও সম্পদের অংশবিশেষ রয়েছে। আর যারা তীব্র লোভ থেকে মুক্ত হতে পারবে, তারাই পরমানন্দের ধাম জান্নাত বা স্বর্গ লাভ করতে সফল হবে। আর যারা এদের পরেও আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রতি এবং প্রকৃত ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাদের জন্যও যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু থেকে ফাই এর প্রাপ্ত মাল বা দ্রব্য ও সম্পদের অংশবিশেষ রয়েছে। তারা এই বলে প্রার্থনা করে থাকে: হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এবং আমাদের পূর্বের প্রকৃত ইমানদার মুসলিম সমাজকে আপনি ক্ষমা করুন। আর প্রকৃত ইমানদার মুসলিম সমাজের বিষয়ে সকল প্রকারের হিংসা ও শত্রুতা থেকে আমাদের অন্তরকে মুক্ত ও পবিত্র রাখুন। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি অতি করুণাপূর্ণ সত্তার প্রকৃত অধিকারী, পরমদয়ালু”। (সূরা আল হাশর, আয়াত নং ৮-১০)।
২। সকল সাহাবীর প্রতি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা:
সুতরাং প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির কর্তব্য হলো এই যে, যখন কোনো সাহাবীর নাম তার সামনে উল্লেখ করা হবে, তখনই যেন সে পাঠ করে [রাদিয়াল্লাহু আনহু] এর অর্থ হলো: “প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ তাঁর প্রতি প্রসন্ন বা সন্তুষ্ট হউন”। যেহেতু প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন আর তিনি তাঁদের উপাসনা ও সৎ কর্ম কবুল করেছেন এবং তিনি তাঁদেরকে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের ও পরকালের যে সমস্ত অনুগ্রহ ও মর্যাদা প্রদান করেছেন তাতে তাঁরাও সন্তুষ্ট হয়েছেন। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (وَالسَّابِقُوْنَ الْأَوَّلُوْنَ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِيْنَ اتَّبَعُوْهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوْا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِيْ تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِيْنَ فِيْهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ)، سورة التوبة، الآية 100. ভাবার্থের অনুবাদ: “যারা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ও তদীয় বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি প্রকৃত ইমান বা বিশ্বাস স্থাপনে অগ্রগামী মুহাজির ও আনসার সাহাবী ছিলেন এবং যারা আন্তরিকতার সহিত তাঁদের অনুসরণ করেছেন, মহান আল্লাহ তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তাঁরাও মহান আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ তাঁদের জন্য তাঁদের পুরস্কার হিসেবে পরমানন্দের ধাম জান্নাত বা স্বর্গ সুসজ্জিত করে রেখেছেন। সেই জান্নাত বা স্বর্গের নিম্নদেশে প্রবাহিত রয়েছে কতকগুলি নদী। সেখানে তাঁরা পরমানন্দের সহিত বসবাস করবে চিরস্থায়ী। আর এটাই হলো তাদের জন্য মহাসাফল্য”। (সূরা আত্তাওবা, আয়াত নং ১০০)।
-সাহাবীদের মর্যাদা:
১। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সকল সাহাবী ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, সহানুভূতিশীল, হিতকারী, কল্যাণকারী এবং সম্মানিত ব্যক্তিত্বের প্রকৃত অধিকারী। আর তাঁদের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট বা সর্বপ্রধান ছিলেন মুসলিম রাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রধান চারজন খলিফা বা শাসনকর্তা ও প্রকৃত ইসলাম ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ নৃপতি। ক্রমানুসারে বা পর্যায়ক্রমে তাঁরা হলেন: আবু বাকর আস্সিদ্দিক, ওমার ইবনুল খাত্তাব, ওসমান বিন আফফান এবং আলী বিন আবি তালিব [রাদিয়াল্লাহু আনহুম] “প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ তাঁদের প্রতি প্রসন্ন বা সন্তুষ্ট হউন”।
২। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সম্মানিত সাহাবীগণ ছিলেন মানুষ। তাই তাঁরা ভুলভ্রান্তি বা ভুলচুকের ঊর্ধ্বে ছিলেন না। অতএব তাঁদের দ্বারা কিছু ভুলচুক হয়েছে। তবে অন্যদের চেয়ে তাঁদের ভুলচুকের সংখ্যা খুব অল্প। এবং তাঁদের মঙ্গল বা কল্যাণ অন্যদের চেয়ে পরিমাণে অনেক বেশি। তাই তাঁদেরকে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ মানব জাতির মধ্যে থেকে সর্বোৎকৃষ্ট শ্রেণির মানুষ হিসেবে নিজের বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাহাবীরূপে বা সহচররূপে চয়ন করেছেন। যাতে তাঁরা প্রকৃত ইসলাম ধর্মের সঠিক ধারক, বাহক ও রক্ষক হতে পারেন। তাই আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "خَيْرُكُمْ قَرْنِي، ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ". (صحيح البخاري، رقم الحديث 6695، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 214- (2535)،). অর্থ: “আমার মুসলিম জাতির মধ্যে সৰ্বোত্তম মানুষ হলো তাঁরাই, যাদের মাঝে আমি আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল অথবা নাবী বা দূত হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। আর তারা হলেন সহাবীদের শ্রেণি। তারপর তাদের পরের শ্রেণি। তারপর তাদের পরের সারির মানুষ”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৬৯৫ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২১৪ - (২৫৩৫) এবং তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।
৩। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সম্মানিত সাহাবীগণের ক্ষেত্রে আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তাঁরা ছিলেন ন্যায়পরায়ণ ও সৎকর্মপরায়ণ মানুষ। তাঁদের কল্যাণকর, ইতিবাচক ও ন্যায়সঙ্গত সাফল্যের দিকগুলি তুলে ধরবো এবং তাঁদের কোনো অমঙ্গলজনক বা অকল্যাণকর অথবা নেতিবাচক ভুলচুকের বিষয় উপস্থাপন করা হতে বিরত থাকবো। তাঁদের ভুলচুকের চেয়ে অনেক বেশি এবং অত্যন্ত গভীর ও মজবুত ইমান ছিলো প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ও তদীয় বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি। তাই তাঁরা প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক অনেক সৎ কর্ম করেছেন এবং নিজেদের জীবন পরিচালিত করেছেন ন্যায়পরায়ণতার সহিত। তাই আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "لَا تَسُبُّوْا أَصْحابِيْ؛ فَلَوْ أنَّ أحَدَكُمْ أنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا، مَا بَلَغَ مُدَّ أحَدِهِمْ ولَا نَصِيْفَهُ". (صحيح البخاري، رقم الحديث 3673). অর্থ: “তোমরা আমার সাহাবীদেরকে গালি দিও না। যদি তোমাদের মধ্যে থেকে কোনো ব্যক্তি এক ওহুদ পাহাড় ওজনের সমপরিমাণ স্বর্ণ দান করে, তবুও সে তাঁদের এক মুদ্দ বা তার অর্ধেক ওজনের সমপরিমাণ কোনো বস্তুর দানের পুণ্য বা মর্যাদা লাভ করতে পারবে না। মুদ্দের অর্থ হলো এক মতে ৮১২.৫ গ্রাম এবং অন্য মতে হলো ৫১০ গ্রাম বা ৬৫০ গ্রাম”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৬৭৩]।
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পরিবার-পরিজন হলেন: তাঁর স্ত্রীগণ, তাঁর সকল সন্তান-সন্ততি এবং তাঁর চাচাদের সন্তান সন্ততি, যেমন:- আলী [রাদিয়াল্লাহু আনহু] এর পরিবার-পরিজন, আকিল [রাদিয়াল্লাহু আনহু] এর পরিবার-পরিজন, জাফার [রাদিয়াল্লাহু আনহু] এর পরিবার-পরিজন এবং আল আব্বাস [রাদিয়াল্লাহু আনহু] এর পরিবার-পরিজন এবং তাঁদের সকলের সকল ছেলেমেয়ে ও সন্তান-সন্ততি।
তাঁদের মধ্যে সর্বোত্তম হলেন তাঁরা, যারা আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, যেমন:- আলী [রাদিয়াল্লাহু আনহু] এবং আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর কন্যা বা মেয়ে ফাতিমা [রাদিয়াল্লাহু আনহা] আর তাঁর দুই ছেলে: আল হাসান এবং আল হুসাইন, জান্নাতবাসী যুবকদের দুই নায়ক। এবং আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর স্ত্রীগণ তথা প্রকৃত ইমানদার মুসলিম সমাজের মাতাগণ, যেমন:- মা খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ এবং মা আয়েশা সিদ্দিকা [রাদিয়াল্লাহু আনহুম]।
আর তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (إِنَّمَا يُرِيدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا)، سورة الأحزاب، جزء من الآية 33. ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পত্নীগণ! তোমরা জেনে রাখো! মহান আল্লাহ তোমাদের মধ্যে থেকে সকল প্রকারের অপবিত্রতা দূরীভূত করতে চান এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে সব দিক দিয়ে পবিত্র করে রাখতে চান”। (সূরা আল আহযাব, আয়াত নং ৩৩ এর অংশবিশেষ)।
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পরিবার-পরিজনকে ভালোবাসা অপরিহার্য:
প্রকৃত ইমনদার মুসলিম ব্যক্তি আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পত্নীগণকে এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের ওই সমস্ত লোকজনকে ভালোবাসে, যে সমস্ত লোকজন প্রকৃত ইমনদার মুসলিম সমাজের অন্তর্ভুক্ত এবং আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বিধিবিধানের অনুসরণকারী। আর তাঁদেরকে ভালোবাসা হলো আসলে আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে ভালোবাসার নামান্তর এবং তাঁর উপদেশের বাস্তবায়ন। যেহেতু তিনি তাঁর পত্নীগণের এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের সম্মান ও যত্ন করার উপদেশ দিয়েছেন এবং তাঁদের সাথে আচরণ ভালো রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং বলেছেন: "أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِيْ أَهْلِ بَيْتِيْ، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِيْ أَهْلِ بَيْتِيْ، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِيْ أَهْلِ بَيْتِيْ". (صحيح مسلم، جزء من رقم الحديث 35 - (2408)، ). “আমি তোমাদেরকে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আনুগত্য করার, আমার পরিবার-পরিজনের সম্মান রক্ষা করার আদেশ দিচ্ছি এবং তাঁদের প্রতি অন্যায়, অত্যাচার বা অবিচার ও দুর্ব্যবহার করা হতে সতর্ক করছি। “আমি তোমাদেরকে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আনুগত্য করার, আমার পরিবার-পরিজনের সম্মান রক্ষা করার আদেশ দিচ্ছি এবং তাঁদের প্রতি অন্যায়, অত্যাচার বা অবিচার ও দুর্ব্যবহার করা হতে সতর্ক করছি। “আমি তোমাদেরকে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আনুগত্য করার, আমার পরিবার-পরিজনের সম্মান রক্ষা করার আদেশ দিচ্ছি এবং তাঁদের প্রতি অন্যায়, অত্যাচার বা অবিচার ও দুর্ব্যবহার করা হতে সতর্ক করছি”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫ - (২৪০৮) এর অংশবিশেষ] । যেমন কোনো দয়াবান পিতা তার সন্তানদের সংরক্ষণের জন্য বলে থাকেন: আমার সন্তানদের সংরক্ষণের জন্য আমি তোমাদেরকে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর আনুগত্য করার উপদেশ দিচ্ছি এবং আমার সন্তানদের সংরক্ষণের জন্য এবং তাদের অধিকারগুলির প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য উপদেশ দিচ্ছি এবং তাদের প্রতি অন্যায়, অত্যাচার বা অবিচার ও দুর্ব্যবহার করা হতে সতর্ক করছি ।
একজন প্রকৃত ইমানদার মুসলিম ব্যক্তি নিজেকে দুই শ্রেণির সম্প্রদায় হতে বিচ্ছিন্ন করে রাখবে:
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পরবিার-পরজিন নিষ্পাপ বা ভুলভ্রান্তি অথবা ভুলচুকের ঊর্ধ্বে ছিলেন না:
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পরবিার-পরজিন অন্যান্য সকল মানুষের মতোই ছিলেন। তাদের মধ্যে মুসলিম ও অমুসলিম ছিলেন এবং তাদের মধ্যে সৎ ও অসৎ বা গুনাগার ছিলেন। তাই তাদের মধ্যে যারা সৎ লোক ছিলেন, তাদেরকে আমরা ভালোবাসবো এবং তাদের জন্য সোয়াব বা পুণ্যের আশা করবো। আর তাদের মধ্যে যারা অসৎ বা গুনাগার ছিলেন, তাদের জন্য আমরা ভয় পাচ্ছি এবং তাদের জন্য হিদায়েত কামনা করছি। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পরবিার-পরজিনের মর্যাদার অর্থ এই নয় যে, তাদেরকে সর্বাবস্থায় সকলের ঊর্ধ্বে মর্যাদা প্রদান করতে হবে এবং সকল মানুষের উপরে তাদেরকে প্রাধান্য দিতে হবে। কেননা মানুষ বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন প্রকারের মর্যাদা লাভ করে থাকেন। আর এমনও হতে পারে যে, অন্যদের মধ্যেও তাদের চেয়ে অতি উত্তম ব্যক্তি আছেন এবং তাদের চেয়েও অতি উৎকৃষ্ট মানুষ আছেন।