শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় ওমরা পালনের বিবরণ

ওমরা হলো: ইহরাম অবস্থায় কাবা ঘরের সাতবার তাওয়াফ এবং সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাতবার সাঈ করার পর মাথার কেশ মুণ্ডিত বা ছোটো করার মাধ্যমে মহান আল্লাহর ইবাদত সম্পাদন করা। এই অনুচ্ছেদে আপনি ওমরার অর্থ, মর্যাদা ও বিবরণ জানতে পারবেন। ‎

  • ওমরার অর্থ, তাৎপর্য এবং মর্যাদার জ্ঞান লাভ করা।
  • ওমরা পালনের জ্ঞান লাভ করা।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

ওমরার সংজ্ঞা বা ওমরা পালনের অর্থ

ওমরার সংজ্ঞা হলো: মহান আল্লাহর এমন একটি ইবাদত যা ইহরাম অবস্থায় কাবা ঘরের সাতবার তাওয়াফ করা এবং সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাতবার সাঈ করার পর মাথার কেশ মুণ্ডিত বা ছোটো করা ।

ওমরা পালনের বিধান

যে ব্যক্তি ওমরা পালন করার সাধ্য বা ক্ষমতা রাখবে, তার প্রতি তার জীবনে মাত্র একবার ওমরা পালন করা ওয়াজেব বা অপরিহার্য হয়ে যাবে। তারপর তার সাধ্য ও সুযোগ মোতাবেক একাধিকবার ওমরা পালন করা মস্তাহাব বা উত্তম বলে পরিগণিত হবে।

তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ)، سورة البقرة، جزء من الآية ١٩٦. ভাবার্থের অনুবাদ: “আর তোমরা আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হজ্জ ও ওমরা সম্পূর্ণরূপে পালন করো”। (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ১৯৬ এর অংশবিশেষ)।

আয়েশা [রাদিয়াল্লাহু আনহা] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছিলেন: হে আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]! আল্লাহর পথে জেহাদ করা কী মহিলাদের প্রতি একটি অপরিহার্য কর্তব্য হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে!? আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাঁর প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন: “হ্যাঁ! মহিলাদের প্রতি একটি অপরিহার্য কর্তব্য হিসেবে জেহাদ নির্ধারিত হয়েছে, তবে তাতে লড়াই নেই। যেহতু তাদের জন্য জেহাদ হলো হজ্জ পালন করা এবং ওমরা পালন করা ”। [সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নং 2901, মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং 25322 এবং সহীহ ইবনু খোজায়মা, হাদীস নং 30704, এই হাদীসটি সঠিক]।

ওমরা পালন করার মর্যাদা

١
عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: "الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا, وَالْحَجُّ الْمَبْرُوْرُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ". (صحيح البخاري, رقم الحديث 1773, واللفظ له، وأيضاً صحيح مسلم, رقم الحديث 437- (1349),). অর্থ: আবু হুরায়রা [রাদিয়াল্লাহু আনহু] হতে বর্ণিত যে, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “একটি ওমরা পালন করার পর আরেকটি ওমরা পালন করলে, উভয় ওমরার মধ্যবর্তী সময়ের কৃত সমস্ত ছোটো পাপের জন্য উভয় ওমরা প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ হয়ে যায়। এবং সঠিক ও বিশুদ্ধ হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭৭৩ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৩৭ -(১৩৪৯), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।
٢
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " تَابِعُوْا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ؛ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَ وَالذُّنُوْبَ، كَمَا يَنْفِي الْكِيْرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ ". (سنن النسائي, رقم الحديث 2630, وصححه الألباني). অর্থ: আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “তোমরা তোমরা হজ্জ পালন করার পর ওমরা পালন করো এবং ওমরা পালন করার পর হজ্জ পালন করো। যেহেতু হজ্জ পালনের কাজটি এবং ওমরা পালনের কাজটি অভাব অনটন ও পাপকে এমনভাবে দূরীভুত করে, যেমনভাবে হাপর লোহার মরিচা বা জং দূরীভুত করে থাকে। [সুনান নাসায়ী, হাদীস নং ২৬৩০, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল আলবাণী হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন]।

ওমরা পালন করার সময়

সারা বছরের যে কোনো সময়ে ওমরা পালন করা বৈধ। তবে হজ্জের মাসগুলিতে ওমরা পালন করা উত্তম। এবং রমাজান মাসে ওমরা পালন করার পুণ্য অনেক বেশি। তাই আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আল্লাহর নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "فإنَّ عُمْرَةً في رَمَضَانَ تَقْضِي حَجَّةً، أوْ حَجَّةً مَعِي". (صحيح البخاري، رقم الحديث 1863، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 222 - (1256)،). অর্থ: “সুতরাং রামাজান মাসের ওমরা পালনের পুণ্য হলো একটি সাধারণ হজ্জ পালনের পুণ্য সমতুল্য অথবা রামাজান মাসের ওমরা পালনের পুণ্য হলো আমার সঙ্গে একটি হজ্জ পালনের পুণ্য সমতুল্য”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮৬৩ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২২ - (১২৫৬), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।

ওমরা পালন করার বিবরণ

١
ইহরাম বাঁধা
٢
কাবা ঘরের তাওয়াফ করা
٣
সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাঈ করা
٤
মাথার কেশ মুণ্ডিত বা ছোটো করা

প্রথম: ইহরাম বাঁধার বিবরণ

যে ব্যক্তি ওমরা পালন করার জন্য ইহরাম বাঁধার ইচ্ছা করবে, সে ব্যক্তির জন্য নিজের পরিধানের সেলাইকৃত কাপড় খুলে দেওয়া, গোসল করা, তার মাথায় ও দাড়িতে সুগন্ধি ব্যবহার করা এবং ইহরাম বাঁধার জন্য কাপড় আলাদা পরিধান করা শরিয়ত সম্মত কাজ।

অতঃপর ফরজ নামাজের সময় হলে মীকাতে ফরজ নামাজ পড়ে নিবে। নচেৎ ইচ্ছা ‎হলে দুই রাকাআত নফল নামাজ পড়বে এবং নমাজ পড়ার পর ওমরাতে প্রবেশ করার ‎নিয়ত হৃদয়ে স্থির করবে। তারপর তালবীয়াহ পাঠ করবে এবং বলবে: ‘লাব্বাইকা ‎আল্লাহুম্মা ওমরা” । ‎

-

দ্বিতীয়ত: কাবা ঘরের প্রদক্ষিণ বা তওয়াফ করা

সুতরাং ওমরা পালনকারী যখন মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে, তখন সে তার ডান ‎পা প্রথমে প্রবেশ করাবে। আর মাসজিদে প্রবেশের দোয়া পাঠ করবে। তারপর যখন ‎সে কাবা ঘরের কাছে পৌঁছাবে, তখন তওয়াফ শুরু করার পূর্বে তালবিয়া পাঠ করা ‎বন্ধ করবে। আর তওয়াফ করার সময় পুরুষ ব্যক্তির জন্য ইজতিবা করা মোস্তাহাব বা ‎উত্তম ও পছন্দনীয় কাজ। আর ইহরামের চাদরের মাঝখান ডান বগলের নিচে রেখে ‎সেই চাদরের দুই দিক বাঁ কাঁধের উপরে রাখাকে ইজতিবা বলা হয়। ‎

হাজরে আসওয়াদের সামনে থেকে কাবা ঘরের তওয়াফ শুরু করতে হবে। ‎

তারপর তাওয়াফ শুরু করার জন্য হাজরে আসওয়াদের দিকে যাবে এবং ডান হাত ‎দিয়ে হাজরে আসওয়াদকে স্পর্শ করবে এবং চুম্বন করবে। আর হাজরে আসওয়াদকে ‎চুম্বন করা সম্ভব না হলে, তাকে সামনে রাখবে এবং তার দিকে হাত দিয়ে ইশারা ‎করবে আর তাকে বাম দিকে রাখবে। আর কাবা ঘরের সাত চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে ‎তাওয়াফ পূর্ণ করবে। তাওয়াফের সময় প্রথম তিন চক্করে রমল করবে অর্থাৎ বীর ‎দর্পে শৌর্যের সঙ্গে চলবে। এই নিয়মে চলার সময় কদম কাছাকাছি রাখবে আর ‎দ্রুতবেগে চলবে।

অতঃপর তাওয়াফ করতে করতে যখন রুকনে ইয়ামেনির কাছে পৌঁছাবে, তখন তা ‎চুম্বন না করে ইসতিলাম বা স্পর্শ করবে। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে সেই ‎দিকে হাত দিয়ে ইশারা করবে না। আর রুকনে ইয়ামেনির মাঝে এবং হাজরে ‎আসওয়াদের মাঝে বলবে:‎ ‏(رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ).‏ سورة البقرة الآية ٢٠١.‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আল্লাহ! হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতে সর্ব প্রকারের ‎কল্যাণ প্রদান করুন এবং পরকালেও সর্ব প্রকারের কল্যাণ প্রদান করুন। আর আমাদেরকে জাহান্নামের ‎অগ্নিকুণ্ড হতে পরিত্রাণ দান করুন”। (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত নং ২০১)। ‎

-

এবং তাওয়াফ করতে করতে যখনই সে কালো পাথর বা হাজরে আসওয়াদের পাশ দিয়ে অতিক্রম ‎করবে, তখনই সে তাকবীর বা আল্লাহু আকবার বলবে। আর সে তার বাকি তাওয়াফের অংশে ইচ্ছা ‎মোতাবেক মহান আল্লাহর জিকিরে এবং দোয়ায় অথবা কুরআন তিলাওয়াতে লিপ্ত থাকবে।‎

তাওয়াফের দুই রাকাআত নামাজ

ওমরা পালনকারী কাবা ঘরের সাত চক্কর দিয়ে তাওয়াফ শেষ করবে তারপর সে তার ‎চাদরকে কাঁধের উপরে রাখবে এবং সেই চাদরের দুই দিক বুকের উপরে রাখবে। ‎অতঃপর মাকামে ইবরাহিম এর দিকে চলে যাবে এবং সম্ভব হলে সেখানে দুই ‎রাকাআত নামাজ পড়বে অথবা মাসজিদুল হারামের যে কোনো স্থানে সেই দুই ‎রাকাআত নামাজ পড়বে। সূরা আল ফাতিহার পর প্রথম রাকাআতে সূরা আল ‎কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা আল ইখলাস পাঠ করবে। ‎

তৃতীয়ত: সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাতবার সাঈ করার বিবরণ

তারপর ওমরা পালনকারী সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাঈ করার জন্য সাফার দিকে ‎যাকে। সাফার নিকটবর্তী হলে বলবে:‎‏ ‏‎ ‎ ‏(إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ)، سورة البقرة، جزء من الآية 158. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “অবশ্যই সাফা ও মারওয়ার নিকটে আল্লাহর উপাসনা করার ‎নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। ‎ ‎(সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ১৫৮ এর অংশবিশেষ)।

অতঃপর সাফায় পৌঁছাবে এবং কাবা ঘরকে নিজের সামনে রেখে দুই হাত তুলে মহান ‎আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং দোয়া করবে। আর আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ ‎মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পঠিত দোয়ার মধ্যে ছিলো:‎ ‏"لَا إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَشَرِيْكَ لَهُ؛ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ،‎ ‎لَا إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ، أَنْجَزَ وَعْدَهُ، وَنَصَرَ ‏عَبْدَهُ، وهَزَمَ الأَحْزَابَ وَحْدَهُ،‎ ‎ অর্থ: “এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই, তিনি একক ও ‎শরীকবিহীন, সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাঁরই জন্য, সমস্ত প্রশংসা তাঁরই জন্য, তিনি সর্ব ‎বিষয়ে ক্ষমতাবান। এক ও অদ্বিতীয় মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো সত্য উপাস্য ‎নেই। তিনি নিজের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন এবং তাঁর সুপ্রিয় দাস বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ ‎‎[সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে সাহায্য করেছেন ও শত্রু বাহিনীকে একাই পরাস্ত ‎করেছেন”। তারপর নিজের ইচ্ছা মোতাবেক অন্য দোয়াও করবে এবং তা তিনবার করে পুনরাবৃত্তি ‎করবে।‎

-

তারপর ওমরা পালনকারী সাফা থেকে মারওয়ার অভিমুখে রওয়ানা দিবে। সুতরাং ‎মারওয়ার অভিমুখে সোজাসুজি যেতে থাকবে। এবং পুরুষ ব্যক্তি সবুজ বাতির জায়গায় ‎উপস্থিত হলে যতটা সম্ভব দ্রুত বেগে ধাবিত হবে ও দৌড় দিবে। তবে কোনো মহিলা ‎সেই স্থানে দ্রুত বেগে ধাবিত হবে না এবং দৌড়ও দিবে না। অতএব সাফা ও ‎মারওয়ার মধ্যে যে কোনো মহিলা সাতবার সাধারণভাবে সাঈ করবে এবং দৌড় দিবে ‎না এটাই হলো প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা। ‎

-

তারপর সে হাঁটতে থাকবে এবং হাঁটতে হাঁটতে মারওয়ায় পৌঁছাবে। সুতরাং সে ‎মারওয়ায় পৌঁছানোর পর সেখানে সে কাবা ঘরকে সামনে রেখে দুই হাত তুলে সেই ‎দোয়া পাঠ করবে, যে দোয়া সাফায় পাঠ করেছিলো। তবে মারওয়ায় পৌঁছানোর পর ‎সেখানে এই আয়াতটি পাঠ করবে না:‎‏ ‏‎ ‎ ‏(إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللَّهِ)، سورة البقرة، جزء من الآية 158. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “অবশ্যই সাফা ও মারওয়ার নিকটে আল্লাহর উপাসনা করার ‎নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। ‎ ‎(সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ১৫৮ এর অংশবিশেষ)। আর এই কথাটিও বলবে না: মহান আল্লাহ যা দিয়ে শুরু করেছেন, আমি তা দিয়ে শুরু ‎করছি।‎

-

তারপর ওমরা পালনকারী আবার মারওয়া থেকে সাফার অভিমুখে রওয়ানা দিবে। ‎সুতরাং সাফার অভিমুখে যেতে থাকবে। এবং পুরুষ ব্যক্তি সবুজ বাতির জায়গায় ‎উপস্থিত হলে যতটা সম্ভব দ্রুত বেগে ধাবিত হবে ও দৌড় দিবে। এবং মারওয়াতে যা ‎করেছিলো, তা সাফাতেও করবে। আর এই ভাবে সাফা এবং মারওয়ার মাঝে সাত ‎চক্কর দিয়ে সাতবার সাঈ করবে। আর জেনে রাখতে হবে যে, সাফা থেকে মারওয়া ‎গেলে একটি সাঈ হয়ে যায় এবং মারওয়া থেকে সাফা গেলে আবার অন্য আরেকটি ‎সাঈ হয়ে যায়। আর সাঈ করার অবস্থায় মহান আল্লাহর জিকির ও দোয়ায় মগ্ন থাকা ‎উত্তম বা মোস্তহাব। এবং সাঈ করার অবস্থায় সকল প্রকারের ছোটো বড়ো অপবিত্রতা ‎থেকে পবিত্র থাকাও উত্তম বা মোস্তাহাব। ‎

-

চতুর্থত: মাথার কেশ মুণ্ডন করা অথবা ছোটো করা

অতঃপর ওমরা পালনকারী সাফা ও মারওয়ার সাঈ সম্পন্ন করার পর সাঈ করার স্থান ‎থেকে বেরিয়ে যাবে মাথার কেশ মুণ্ডন করার জন্য অথবা ছোটো করার জন্য। তবে ‎মুণ্ডন করাই হলো উত্তম। ‎

عن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما: أن رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ, قَالَ: "اَللَّهُمَّ ارْحَمِ المُحَلِّقِيْنَ" ‏قَالُوْا: وَالْمُقَصِّرِيْنَ يَا رَسُوْلَ اللهِ! قَالَ: "اَللَّهُمَّ ارْحَمِ المُحَلِّقِيْنَ" قَالُوْا: وَالْمُقَصِّرِينَ يَا رَسُوْلَ اللهِ! قَالَ: ‏‏"وَالْمُقَصِّرِيْنَ".‏ ‏(صحيح البخاري, رقم الحديث 1727, واللفظ له، وصحيح مسلم, رقم الحديث 318 - (1301),).‏ অর্থ: আব্দুল্লাহ বিন ওমার [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা] থেকে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর বার্তাবহ ‎রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হতে বর্ণনা করেছেন: ‎আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: ‎‎“হে আল্লাহ! মাথার কেশ মুণ্ডনকারীদের প্রতি দয়া করুন”। সাহাবীগণ বললেন: হে ‎আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল! যারা মাথার চুল ছোটো করেছে তাদের প্রতিও। আল্লাহর ‎বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন: ‎“হে ‎আল্লাহ! মাথার কেশ মুণ্ডনকারীদের প্রতি দয়া করুন”। সাহাবীগণ বললেন: হে ‎বার্তাবহ রাসূল! যারা মাথার চুল ছোটো করেছে তাদের প্রতিও। তখন আল্লাহর ‎বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেন: “যারা চুল ‎ছোটো করেছে তাদের প্রতিও মহান আল্লাহ দয়া করুন”। ‎[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৭২৭ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩১৮ -(১৩০১), তবে ‎হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে]।

কিন্তু মহিলার ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা। তাই মহিলা মাথার কেশ আঙ্গুলের অগ্রভাগ ‎পরিমাণ ছোটো করবে। উল্লিখিত কর্মগুলি সম্পাদন করার মাধ্যমে ওমরা পালনের সমস্ত ‎কাজ শেষ হয়ে যায়। আর ওমরা পালনকারীর প্রতি ইহরামের মাধ্যমে‎ যে সমস্ত জিনিস ‎হারাম হয়ে যায়, সে সমস্ত জিনিস উল্লিখিত কর্মগুলি সম্পাদন করার মাধ্যমে হালাল বা ‎বৈধ হয়ে যায়। ‎

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন