শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় প্রকৃত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার নিয়ম পদ্ধতি।

যে কোনো মানুষের জন্য প্রকৃত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার মুহূর্তটি হলো তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ‎মুহূর্ত। এবং তার এই জীবনের প্রধান লক্ষ্য জানার পর এখন তার জীবনের আসল জন্ম হলো। ‎এই অনুচ্ছেদ মানুষ কিভাবে মুসলিম হতে পারবে এবং কিভাবে প্রকৃত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে, ‎তার বিবরণ পেশ করা হয়েছে।

  • প্রকৃত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার নিয়ম পদ্ধতির জ্ঞান লাভ করা।
  • অনুতপ্ত হয়ে তওবা করার গুরুত্ব এবং তওবার প্রতি অটল থাকার উপাদানগুলির জ্ঞান লাভ করা।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

কোনো মানুষ যখন এই বলে দুইটি সাক্ষ্য উচ্চারণ করবে যে, প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই আর বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল ও প্রিয় ব্যক্তি। এবং এই দুই সাক্ষ্য উচ্চারণের অর্থ ও তাৎপর্য বুঝতে পারবে আর তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং তার দাবি মোতাবেক নিজের জীবন পরিচালিত করার ইচ্ছা পোষণ করবে, তখন সে প্রকৃত মুসলিম হিসেবে পরিগণিত হবে।

দুইটি সাক্ষ্য হলো:

١
“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই। অর্থৎ: আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি এবং আন্তরিকতার সহিত বিশ্বাস করছি যে, প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই। সুতরাং আমি কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদত বা উপাসনা করি। যেহেতু তিনি এক ও অদ্বিতীয় তাই তাঁর কোনো অংশীদার বা শরিক নেই।
٢
“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, অবশ্যই বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর প্রিয় ব্যক্তি ও বার্তাবহ রাসূল”। অর্থৎ: আমি আন্তরিকতার সহিত সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল ও প্রিয় ব্যক্তি। তিনি সকল জাতির মানব সমাজের প্রতি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত হয়েছেন। সুতরাং আমি তাঁর উপদেশ মেনে চলবো এবং তাঁর নিষিদ্ধ করা বা বিনিবারিত বিষয় থেকে বিরত থাকবো আর তাঁর প্রদত্ত নিয়ম পদ্ধতি ও বিধিবিধান মোতাবেক প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর ইবাদত বা উপাসনা করবো।

নওমুসলিমের গোসল করার বিধান:‎

যে কোনো মাষের প্রকৃত ইসলাম ধর্মে প্রবেশ করার মুহূর্তটি হলো তার জীবনের ‎সর্বশ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। আর এই মুহূর্তটি হলো তার প্রকৃত জন্ম গ্রহণের আসল মুহূর্ত। এই ‎নতুন জন্মে সে তার জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য বা লক্ষ জানতে পেরেছে। তার প্রকৃত ‎ইসলাম ধর্মে প্রবেশ করার সাথে সাথে তার জন্য স্নান বা গোসল করা হলো প্রকৃত ‎ইসলাম ধর্মের শিক্ষা সম্মত একটি কাজ। তাই সে তার সারা শরীরকে পবিত্র পানি ‎দিয়ে ধৌত করবে। সে যেমন প্রকৃত ইসলাম ধর্ম গ্রহণের দ্বারা সমস্ত প্রকারের শির্ক ‎ও পাপ থেকে নিজেকে পবিত্র করেছে, সেই রূপ তার জন্য তার সারা শরীরকে ‎পবিত্র পানি দিয়ে ধৌত করা এবং স্নান কিংবা গোসল করা হলো তার জন্য ‎মোস্তাহাব বিষয়। ‎

আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ‎আরবদের একজন নেতা সাহাবী যখন প্রকৃত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ইচ্ছা ‎করেছিলেন, তখন তিনি তাকে স্নান কিংবা গোসল করা নির্দেশ দিয়েছিলেন। (আল ‎বাইহাকী ৮৩৭)। ‎

তওবা করার বিবরণ

প্রকৃত ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী কতকগুলি নির্দিষ্ট নিয়ম মোতাবেক ‎যে কোনো পাপ থেকে মহান আল্লাহর আনুগত্যের দিকে প্রত্যাবর্তন ‎করাকে তওবা বলা হয়। তাই যে ব্যক্তি তার পাপ ও কুফুর অথবা ‎আল্লাহকে বা তাঁর শিক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করা হতে আন্তরিকতার সহিত ‎নিষ্টাবান হয়ে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর প্রদত্ত শিক্ষার ‎দিকে প্রত্যাবর্তন করাই হলো তওবা করা। ‎

তওবা করার শর্তসমূহ: ‎

١
১। প্রকৃত ইসলাম ধর্মের বিপরীত কাজ বা পাপ সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে। ‎কেননা পাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় তওবা করা হয় না। কিন্তু যে পাপ থেকে ‎সঠিকভাবে তওবা করা হয়েছে, সেই পাপের দিকে পুনরায় প্রত্যাবর্তন করলে, ‎পূর্বের তওবা নষ্ট হবেনা। তবে পুনরায় সেই পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে নতুন ‎করে আবার তওবা করতে হবে। এইভাবে যে কোনো পাপ থেকে সঠিক নিয়মে ‎তওবা করার পর সেই পাপ পুনরায় সংঘটিত হয়ে গেলে সেই পাপ থেকে আবার ‎নতুন করে তওবা করতে হবে। ‎
٢
২। যে কোনো পাপ থেকে আন্তরিকতার সহিত অনুশোচিত বা অনুতপ্ত হতে হবে। ‎আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: ‎ ‏"اَلنَّدَمُ تَوْبَةٌ".‏ অর্থ: “পাপ সংঘটিত হওয়ার পরে পাপের কারণে অনুতপ্ত হওয়ার বিষয়টি হলো ‎তওবা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ”। ‎ ‎[সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীস নং ৪২৫২, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল আলবাণী ‎হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন]। সুতরাং পাপ সংঘটিত হওয়ার কারণে মনেপ্রানে আন্তরিকতার সাথে গভীরভাবে ‎অনুতপ্ত, অনুশোচিত ও দুঃখিত হওয়া ছাড়া তওবার কোনো ধারণা করা যায় না। ‎ আর সেই ব্যক্তিকে প্রকৃত অনুশোচিত ও অনুতপ্ত ব্যক্তি বলা যাবে না, যে ব্যক্তি তার ‎অতীতের পাপের বিষয়ে গর্ব করে, গৌরব করে এবং অহংকার করে; কেননা তাকে ‎প্রকৃত অনুশোচিত ও অনুতপ্ত ব্যক্তি বলা যাবে না।
٣
৩। যে পাপ থেকে তওবা করা হচ্ছে, সেই পাপের দিকে পুনরায় না যাওয়ার দৃঢ় ‎সংকল্প করতে হবে। সুতরাং যে পাপ থেকে তওবা করা হচ্ছে, সেই পাপের দিকে ‎পুনরায় প্রত্যাবর্তন করার ইচ্ছা মনের মধ্যে স্থাপন করলে তওবা হবে না। ‎
٤
৪। যে পাপ থেকে তওবা করা হচ্ছে, সেই পাপ যদি অন্যের অধিকারের সাথে ‎সম্পৃক্ত হয়, তাহলে সেই অধিকার তাকে ফেরত দিতে হবে। অথবা তার কাছ ‎থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

তওবার প্রতি স্থিরভাবে অবিচল থাকার কতকগুলি পদক্ষেপ

١
সে নিজের সঙ্গে অঙ্গীকার করবে যে, সে কোনো অবস্থায় এবং কোনো পরিস্থিতিতে ‎চোখের পলকের সময়ের মত সময়ের জন্য পূর্বের পাপের দিকে ফিরে আসবে না। ‎আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:‎ ‎“তিনটি বিষয় যে ব্যক্তির মধ্যে থাকবে, সে ব্যক্তি ইমানের বা বিশ্বাসের স্বাদ গ্রহণ ‎করবে । আর সেই তিনটি বিষয়ের মধ্যে থেকে একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন: “এবং ‎সে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের অনুগামী হওয়ার পর প্রকৃত ইসলাম ধর্ম থেকে অন্য দিকে ‎ফিরে যাওয়াকে এমন ঘৃণা করবে, যেমন সে নিজেকে আগুনে নিক্ষিপ করাকে ঘৃণা ‎করে” (বুখারি 21, মুসলিম 43)।
٢
ওই সমস্ত মানুষ ও স্থান থেকে দূরে থাকবে, যে সমস্ত মানুষ ও স্থান তার ইমান বা ‎বিশ্বাসকে দুর্বল করে দিবে এবং তার জন্য পাপের পথ প্রশস্ত ও প্রসারিত করে দিবে। ‎
٣
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর কাছে যে কোনো বাক্যের দ্বারা এবং যে ‎কোনো ভাষায় প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষার প্রতি স্থিরভাবে অবিচল থাকার জন্য অনেক ‎দোয়া করবে। আর সেই সমস্ত দোয়ার মধ্যে পবিত্র কুরআনের মধ্যে একটি দোয়া ‎এইভাবে এসেছে:‎ ‏(رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا)، سورة آل عمران، جزء من الآية 8. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আমাদের প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান প্রতিপালক ‎আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের সঠিক অনুগামী করার পর আমাদের ‎অন্তরকে কোনো সময় বিভ্রান্তির পথে পরিচালিত করবেন না”। ‎(সূরা আল ইমরান, আয়াত নং ৮ এর অংশবিশেষ)। ‎ আর সেই সমস্ত দোয়ার মধ্যে থেকে একটি দোয়া হাদীসের মধ্যে এইভাবে এসেছে:‎ ‏"يا مقلب القلوب ثبت قلبي على دينك" ‏ অর্থ: “হে সমস্ত হৃদয়ের নিয়ন্তা মহান আল্লাহ! আপনি আমার হৃদয়কে আপনার প্রকৃত ‎ইসলাম ধর্মের প্রতি সুদৃঢ় রাখুন”। ‎(তিরমিযী 2140)।

তওবা করার পর করণীয় কাজ কী?‎

মানুষ যখন অনুতপ্ত হয়ে তওবা করে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর ‎দিকে ফিরে আসবে এবং তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করবে, তখন তিনি তার সমস্ত পাপ ‎মাফ করে দিবেন তার পাপ যত বড়োই হোক না কেন। যেহেতু তাঁর করুণা ‎সবকিছুকেই পরিবেষ্টিত করে রেখেছে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে ‎বলেছেন:‎ ‏(قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِيْنَ‎ ‎أَسْرَفُوْا عَلَى أَنفُسِهِمْ‎ ‎لَا تَقْنَطُوْا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُوْرُ ‏الرَّحِيْمُ)، سورة الزمر، الآية 53. ‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “হে আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! তুমি বলে দাও: ‎আল্লাহ বলেছেন: হে আমার সকল জাতির মানব সমাজ! তোমরা যারা নিজেদের ‎আত্মার প্রতি বড়ো বড়ো পাপের দ্বারা জুলুম অত্যাচার করেছো, তোমরা আল্লাহর কৃপা ‎হতে কোনো সময় নিরাশ হয়ো না; কেননা তোমরা যদি সঠিকভাবে অনুতাপী হয়ে ‎ইসলামের পথে পরিচালিত হও, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে ‎দিবেন; নিশ্চয় তিনি ক্ষমাবান দয়াবান”। ‎ ‎(সূরা আযযুমার, আয়াত নং ৫৩)।

সত্যপরায়ণ মুসলিম ব্যক্তি অনুতপ্ত হয়ে সঠিকভাবে একনিষ্ঠতার সহিত সত্যিকারের ‎তওবা করলে সে নিষ্পাপ ও পবিত্র হয়ে যায়। বরং মহান আল্লাহর প্রতি ‎প্রত্যাবর্তনকারী সত্যিকারের অনুতপ্ত তওবাকারীকে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান ‎আল্লাহ মহা সম্মানিত করে মহা পুরস্কার প্রদান করেন। অতএব তার সমস্ত পাপকে ‎পুণ্যে পরিবর্তিত বা রূপান্তরিত করেন। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে ‎বলেছেন:‎ ‏{إِلَّا مَنْ تَابَ وَآَمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا} ‏‏(الفرقان: 70).‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “ তবে যারা অনুতপ্ত হয়ে তওবা করবে এবং তাদের অন্তরে মহান ‎আল্লাহর প্রতি ইমান বা বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং সৎকর্ম করবে, মহান আল্লাহ তাদের ‎সমস্ত পাপকে পুণ্যে রূপান্তরিত করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। (আল-‎ফুরকান : ৭০)।

আর যে ব্যক্তি এই নিয়মে অনুতপ্ত হয়ে সঠিকভাবে একনিষ্ঠতার সহিত সত্যিকারের ‎তওবা করবে, সে ব্যক্তির উচিত যে, সে যেন তার পবিত্র তওবার সংরক্ষণ করার জন্য ‎সবচেয়ে মূল্যবান ও মর্যাদাবান বিষয় বিসর্জিত করে এবং শয়তানের প্রভাবে পড়ে ‎পুনরায় পূর্বাবস্থায় নিমজ্জিত না হয়। ‎

ইমানের বা বিশ্বাসের স্বাদ বা মিষ্টতা ‎

যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে সর্বাধিক ভালোবাসে এবং অন্যদেরকে ততটাই ‎ভালোবাসে যতটা তারা আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারে এবং যতটা তারা প্রকৃত ইসলাম ‎ধর্মকে সঠিকভাবে মেনে চলতে পারে। এবং কুফরি করা, আল্লাহর অংশীদার স্থাপন ‎করা এবং প্রকৃত ইসলাম ধর্মকে প্রত্যাখ্যান করা তার নিকটে ওই রকম ঘৃণিত বিষয় ‎হয়ে যায়, যে রকম সে নিজেকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা ঘৃণিত বিষয় মনে করে। আর ‎সে ব্যক্তি নিশ্চয় তার হৃদয়ে ইমানের বা বিশ্বাসের স্বাদ বা মিষ্টতা ও আনন্দ এবং মাধুর্য ‎লাভ করবে আল্লাহর প্রতি তার বিমুগ্ধতার কারণে এবং প্রকৃত ইসলাম ধর্মে সুখশান্তি ‎অনুভব করার কারণে এবং মহান আল্লাহর অনুগ্রহ ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত হওয়ার ‎কারণে। তাই আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ‎ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: “তিনটি বিষয় যে ব্যক্তির মধ্যে থাকবে, সে ব্যক্তি ইমানের বা ‎বিশ্বাসের স্বাদ গ্রহণ করবে । আর সেই তিনটি বিষয় হলো: “আল্লাহ ও তাঁর বার্তাবহ ‎রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছুর চেয়ে বেশি প্রিয় হবে এবং সে কোনো ব্যক্তিকে ‎ভালোবাসলে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে এবং সে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের ‎অনুগামী হওয়ার পর প্রকৃত ইসলাম ধর্ম থেকে অন্য দিকে ফিরে যাওয়াকে এমন ঘৃণা ‎করবে, যেমন সে নিজেকে আগুনে নিক্ষিপ্ত করাকে ঘৃণা করে” (বুখারি 21, মুসলিম ‎‎43)। ‎

প্রকৃত ইসলাম ধর্মের প্রতি অটল থাকা এবং সেই ক্ষেত্রে কষ্টের বিষয়ে ধৈর্যধারণ করা:‎

যে ব্যক্তি কোনো মূল্যবান সম্পদের মালিক হবে, সে ব্যক্তি সেই মূল্যবান সম্পদের ‎‎সংরক্ষণ করবে। যাতে সেই মূল্যবান সম্পদের প্রতি অপব্যবহারকারীদের এবং ‎চোরদের ‎হাত না যায়। আর সেই মূল্যবান সম্পদের সংরক্ষণের জন্য সে সর্ব ‎প্রকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এবং প্রকৃত ইসলাম ধর্ম হলো মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ মূল্যবান ‎সম্পদ ও মহান আল্লাহর সর্বোত্তম অনুগ্রহ। আর প্রকৃত ইসলাম ধর্ম কোনো একটি ‎ভাবমূলক মত বা ধারণা ও শখ বা মনের ঝোঁক নয় যে, মানুষ তার ইচ্ছামতো কোনো ‎সময় এই ধর্মটিকে মেনে চলবে বা বর্জন করবে। বরং প্রকৃত ইসলাম ধর্ম মানব ‎জীবনের সমস্ত বিষয়ে এবং তার সমস্ত অস্থিরতা, স্থিরতা ও চলাফেরা করার বিষয়ে ‎ফয়সালা প্রদান করে। তাই মহান আল্লাহ তাঁর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ ‎‎[সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে প্রকৃত ইসলাম ও পবিত্র কুরআনের শিক্ষা দৃঢ়ভাবে ‎মেনে চলার আদেশ প্রদান করেছেন এবং সেই প্রকৃত ইসলাম ও পবিত্র কুরআনের ‎শিক্ষাকে কোনো সময় ত্যাগ করতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং মহান আল্লাহ পবিত্র ‎কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏{فَاسْتَمْسِكْ بِالَّذِي أُوحِيَ إِلَيْكَ إِنَّكَ عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيم} (الزخرف: 43).‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “অতএব, তোমার প্রতি যে ওহী অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা দৃঢ়ভাবে ‎তুমি অবলম্বন করো। নিঃসন্দেহে তুমি সরল পথে রয়েছো”। (সূরা জুখরুফ: 43)।‎

প্রকৃত ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর মুসলিম ব্যক্তি কোনো বিপদের সম্মুখীন হলে, দুঃখ কষ্ট ‎প্রকাশ করা উচিত নয়। যেহেতু এই ধরণের বিপদ হলো মহান আল্লাহর জাগতিক ‎নিয়ম। যাঁরা আমাদের চেয়ে ভালো ও উত্তম ছিলেন, তারাও এই ক্ষেত্রে কঠিন বিপদে ‎পড়েছেন এবং তাঁরা ধৈর্য্যধারণ করেছেন আর জেহাদ করেছেন। অতএব মহান ‎আল্লাহর নাবীদেরকে অনেক বড়ো বড়ো বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। দূরের ‎লোকজনের আগে তাঁদের নিজের পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনের দিক থেকে ‎তাঁদের উপরে বিপদ এসেছে। ‎ আল্লাহর পথে তাদের উপরে যে সমস্ত বিপদ এসেছে, সেই সমস্ত বিপদের কারণে ‎তাঁরা দুর্বল হননি এবং তাঁরা বিশেষ পরিবর্তন করেন নি আর কিছু ফিরিয়ে দেননি। ‎বিভিন্ন প্রকারের বিপদও হলো মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ইমান ও আস্থা বা বিশ্বাসের ‎একটি পরীক্ষা। তাই মুসলিম ব্যক্তিকে তার পরীক্ষা মোতাবেক ধৈর্য্যধারণের জন্য প্রস্তুত ‎বা তৈরি থাকতে হবে এবং প্রকৃত ইসলাম ধর্মের উপরে অটল থাকতে হবে। আর ‎আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে হবে, যেমন:- আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী‎‏‎ মুহাম্মাদ ‎‎[সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আল্লাহর কাছে প্রচুর প্রার্থনা করতেন এবং বলতেন: ‎ ‏"يا مقلب القلوب ثبت قلبي على دينك" (الترمذي 2140).‏ অর্থ: “হে আল্লাহ হৃদয়ের পরিবর্তনকারী! আপনি আমার হৃদয়কে আপনার প্রকৃত ধর্ম ‎ইসলামের উপরে দৃঢ়ভাবে অটল রাখুন" (তিরমিজি 2140)।

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন