মডেল: বর্তমান বিভাগ
পাঠ্য বিষয় মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বলে সাক্ষ্য প্রদান করা।
মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সমস্ত সংবাদকে সত্য বলে বিশ্বাস করা, তাঁর আনুগত্য করা ও তাঁর উপদেশ মেনে চলা, তাঁর বিনিবারিত বিষয়াদি হতে বা তাঁর নিষেধকৃত বিষয়াদি হতে বিরত থাকা এবং তাঁর নিয়ম পদ্ধতি মোতাবেক প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর ইবাদত বা উপাসনা করা। আর এর অন্তর্ভুক্ত হলো নিম্নের বিষয়াদি:
১। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যে সমস্ত সংবাদ দিয়েছেন, সে সমস্ত সংবাদকে সত্য বলে বিশ্বাস করা অপরিহার্য। সুতরাং সেই সমস্ত সংবাদের মধ্যে রয়েছে:
২। আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর উপদেশ মেনে চলা এবং তাঁর নিষিদ্ধ করা বা বিনিবারিত বিষয় থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। আর এর মধ্যে রয়েছে:
৩। আমরা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর উপাসনা করবো, কেবলমাত্র বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বিশেষ নিয়ম পদ্ধতি মোতাবেক। আর এই বিধানটির মধ্যে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে নিম্নের বিবরণ অনুযায়ী:
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর অনুসরণ করা
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর রীতিনীতি, বিধিবিধান, তাঁর পবিত্র জীবনের উপদেশ, কর্মপদ্ধতি এবং সমর্থিত সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ ও সর্বোত্তম জীবনবিধান। তাই যে ব্যক্তি তাঁকে নিজের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করবে, সে ব্যক্তি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর নৈকট্য, উচ্চ মর্যাদা ও মহাসম্মান লাভ করবে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللَّهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ)، سورة آل عمران، الآية 31. ভাবার্থের অনুবাদ: “হে বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! তুমি বলে দাও: হে সকল জাতির মানব সমাজ! তোমরা যদি মহান আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমাকে মেনে চলো এবং আমার অনুসরণ করো। তোমরা যদি আমাকে সঠিকভাবে মেনে চলো এবং আমার অনুসরণ করো, তাহলে মহান আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের সমস্ত পাপকে মাফ করে দিবেন। মহান আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরমদয়ালু”। (সূরা আল ইমরান, আয়াত নং ৩১)।
প্রকৃত ইসলাম ধর্মের বিধিবিধান হলো পরিপূর্ণ জীবনবিধান
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রকৃত ইসলাম ধর্ম ও তার সমস্ত বিধিবিধানকে সম্পূর্ণরূপে প্রচার করেছেন; তাই তাতে কোনো প্রকারের কিছু ঘাটতি বা কমতি নেই। অতএব কোনো ব্যক্তির জন্য এটা জায়েজ নয় যে, সে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের মধ্যে নতুনভাবে এমন কোনো ইবাদত বা উপাসনা চালু করবে, যে ইবাদত বা উপাসনার বিধিবিধান অমাদেরকে আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রদান করেননি।
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর মনোনীত ধর্ম প্রকৃত ইসলামের বিধিবিধান সকল যুগ ও সব জায়গার জন্য উপযোগী।
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন এবং বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর শিক্ষা সকল যুগ ও সব জায়গার জন্য উপযোগী। যেহেতু প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ সকল জাতির মানব সমাজের সার্বিক মঙ্গল ও সার্বিক কল্যাণের বিষয়ে সর্বতোভাবে অবগত; কেননা তিনিই তো অনস্তিত্ব বা শূন্য থেকে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর শিক্ষা মোতাবেক প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর উপাসনা হতে হবে।
প্রকৃত ইসলামের উপাসনা গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হওয়ার জন্য প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর জন্য ইখলাস বা একনিষ্ঠতা বজায় রাখা অপরিহার্য এবং বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বিশেষ নিয়ম পদ্ধতি মোতাবেক হওয়াও অপরিহার্য। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (فَمَنْ كَانَ يَرْجُوْ لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَّلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا)، سورة الكهف، جزء من الآية 110. ভাবার্থের অনুবাদ: “অতএব পরকালে মহাবিচার দিবসে যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ করে তার পুরষ্কারের প্রত্যাশিত হবে, সে ব্যক্তি যেন প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালক মহান আল্লাহর উপাসনায় কাউকে অংশীদার স্থাপন না করে”। (সূরা আল কাহাফ, আয়াত নং ১১০ এর অংশবিশেষ)। আর সৎকর্ম তাকেই বলা হয়, যে কর্মটি আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর শিক্ষা মোতাবেক ও সঠিক পন্থায় হয়।
প্রকৃত ইসলাম ধর্মের মধ্যে নতুনভাবে কোনো কর্ম অথবা ইবাদত বা উপাসনা চালু করা হারাম বা অবৈধ।
যে ব্যক্তি প্রকৃত ইসলাম ধর্মের মধ্যে এমন কোনো কর্ম অথবা ইবাদত বা উপাসনা চালু করবে, যে কর্ম অথবা ইবাদত বা উপাসনার শিক্ষা আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর আদর্শে নেই, অথচ সে সেই নতুনপদ্ধতি দ্বারা প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর ইবাদত বা উপাসনা করার ইচ্ছা করছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যেতে পারে যে, যে ব্যক্তি প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা ছাড়া অন্য পদ্ধতিতে নামাজ পড়বে, সে ব্যক্তি আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বিরুদ্ধাচরণকারী এবং পাপাচারী বলেই বিবেচিত হবে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيم) سورة النور، جزء من الآية 63. ভাবার্থের অনুবাদ: “অতএব যারা আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদের আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করবে, তারা এখনই সতর্ক হয়ে যাক। নচেৎ তাদেরকে গ্রাস করবে সর্ব প্রকারের অমঙ্গল এবং তাদেরকে গ্রেফতার করবে কঠিন শাস্তি”। (সূরা আন্ নূর, আয়াত নং ৬৩ এর অংশবিশেষ)। এবং আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "مَنْ أَحْدَثَ فِيْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ". (صحيح البخاري، رقم الحديث 2697، وأيضاً: صحيح مسلم، رقم الحديث 17- (1718)، ). অর্থ: “যে ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের কর্ম হিসেবে এমন কোনো কর্ম সম্পাদন করবে, যে কর্মের বিষয়ে আমাদের প্রকৃত ইসলাম ধর্মের কোনো উপদেশ নেই। তাহলে সেই কর্মটি পরিত্যাজ্য বলেই বিবেচিত হবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮- (১৭১৮) এবং সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৬৯৭, তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ মুসলিম থেকে নেওয়া হয়েছে]।
বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর প্রতি সত্য বার্তাবহ রাসূল হিসেবে ইমান স্থাপন করার প্রকৃত দাবি হলো এই যে, প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহকে এবং তদীয় বার্তাবহ রাসূলকে সব চেয়ে বেশি ভালোবাসা । তাই আল্লাহর বার্তাবহ রাসূল বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ؛ حَتَّى أَكُوْنَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِن وَّالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ". (صحيح البخاري، رقم الحديث 15، واللفظ له، وصحيح مسلم، رقم الحديث 70- (44)، ). অর্থ: “তোমাদের মধ্যে থেকে কোনো ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকৃত ইমানদার মুসলিম হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকটে তার পিতা, সন্তানসন্ততি এবং অন্য সকল মানুষ অপেক্ষা অধিক প্রিয় না হবো”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫ এবং সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭০ -(৪৪), তবে হাদীসের শব্দগুলি সহীহ বুখারী থেকে নেওয়া হয়েছে] ।