শিখতে থাকুন

আপনি তো নিবন্ধিত হননি।
শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি এখনই নিবন্ধন করুন, এর দ্বারা আপনার অগ্রগতিকে অঅপনি ধরে রাখতে পারবেন, আপনার সাংকেতিক চিহ্ন বা পয়েন্টগুলির সংখ্যা একত্রিত করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রতিযোগিতায় আপনার প্রবেশের সুযোগ হবে। তাই এই শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট “তা প্ল্যাটফর্ম” টিতে আপনি নিবন্ধিত হন, আপনি সেই পাঠ্য বিষয়গুলিতে একটি বৈদ্যুতিন সার্টিফিকেট পাবেন, যে পাঠ্য বিষয়গুলির আপনি জ্ঞান লাভ করবেন।

মডেল: বর্তমান বিভাগ

পাঠ্য বিষয় জুয়া খেলা এবং লটারি খেলার বিধান।

এই অনুচ্ছেদে জুয়া এবং লটারি খেলার অর্থ, তার বিধিবিধান এবং মানুষের মধ্যে ও ‎সমাজের মধ্যে তার অনিষ্টকর বিষয়গুলির বিবরণ জানা যাবে।

 

  • জুয়াএবং লটারি খেলার অর্থ জানা।
  • প্রকৃত ইসলাম ধর্মে জুয়াখেলার বিধিবিধানের জ্ঞান লাভ করা।
  • জুয়ার বিভাগ ও তার অনিষ্টকর বিষয়গুলি উপস্থাপন করা।

অন্য একজন ছাত্রকে গণনা করুন। এই পাঠ্য বিষয়টি সম্পূর্ণ করুন

জুয়া এবং লটারি খেলা কাকে বলে?

জুয়া হলো এমন এক প্রকারের খেলা যে, সেই খেলাতে এক বা একাধিক ব্যক্তি জয়ী ‎হয় এবং অন্যরা হেরে যায়। সুতরাং সেই খেলাতে প্রত্যেক খেলোয়াড় জয়ী হয়ে অর্থ ‎বা অন্য কিছু উপার্জন করে অথবা পরাজিত হয়ে অন্য খেলোয়াড়ের কাছে অর্থ বা অন্য ‎কিছু হারে। ‎

প্রকৃত ইসলাম ধর্মে জুয়া খেলার বিধান।

প্রকৃত ইসলাম ধর্মে জুয়া খেলা হারাম বা অবৈধ। তাই পবিত্র কুরআন ও নির্ভরযোগ্য হাদীসে জুয়া খেলা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহ জুয়া এবং লটারি খেলার মধ্যে উপকারের চেয়ে অনিষ্ট ও পাপ অনেক বেশি আছে বলে ঘোষণা করেছেন। তাই তিনি পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন: (يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِن نَّفْعِهِمَا)، سورة البقرة، جزء من الآية 219. ভাবার্থের অনুবাদ: “হে বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ! মুসলিম সমাজ তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে। তাই তুমি তাদেরকে বলে দাও: এই দুইটিই হলো বড়ো পাপের কাজ। আর মানুষের জন্যে এই দুইটি কাজের মধ্যে যে উপকার আছে, তবে তার চেয়ে এইগুলিতে পাপ ও অনিষ্ট অনেক বেশি আছে”। (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ২১৯ এর অংশবিশেষ)।

আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوْهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ)، ‏سورة المائدة، الآية 90.‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “হে ঈমানদার মুসলিমজাতি! অবশ্যই মদ, জুয়াখেলা, প্রতিমা বা ‎মূর্তির উপাসনা করা এবং রাশিফল নির্ধারণ করার জন্য শর প্রভৃতি ব্যবহার করা ‎শয়তানের অপবিত্র আচরণ; তাই এই সমস্ত আচরণ তোমরা বর্জন করো; তবেই ‎তোমরা সুখময়, মঙ্গলময়, শান্তিময় এবং কল্যাণময় জীবন লাভ করার পবিত্র ধাম স্বর্গ ‎বা জান্নাত অর্জন করতে পারবে”। (সূরা আল মায়েদা, আয়াত নং ৯০)। ‎

সমস্ত প্রকারের মাদক দ্রব্য ও জুয়াখেলার দ্বারা মানুষের এবং সমাজের অনেক অনিষ্ট ‎হয়, সেই সমস্ত অনিষ্টের মধ্যে রয়েছে:‎

١
মানুষের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করা: খেলার মাধ্যমে যদি কোনো খেলোয়াড় বা ‎‎প্রতিযোগী জয়ী হয়ে পরাজিত ব্যক্তির অর্থ লাভ করে, তাহলে এর কারণে পরাজিত ‎‎ব্যক্তির অন্তরে জয়ী ব্যক্তির প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হয় পূর্ণমাত্রায়। এবং সে তার ‎ক্ষতি ‎করার জন্য কেবলমাত্র সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। আর এই দৃশ্যের বাস্তবতা ‎সকলেরই জানা ‎আছে। তাই এই বিষয়টির সত্যতা প্রমাণিত করে মহান আল্লাহর ‎পবিত্র বাণী:‎ ‏ (إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ)، سورة المائدة، جزء من الآية 91.‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “অবশ্যই শয়তান সমস্ত প্রকারের মাদক দ্রব্য ও জুয়াখেলার দ্বারা ‎তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে”। (সূরা আল মায়েদা, আয়াত নং ৯১ এর ‎অংশবিশেষ)। ‎
٢
প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সত্য উপাস্য মহান আল্লাহর স্মরণ এবং নামাজ থেকে অবরুদ্ধ করে ‎আর এটাই হলো শয়তানের একটি মহা উদ্দেশ্য। তাই এই বিষয়টি উল্লিখিত আয়াতের ‎মধ্যে এসেছে। আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:‎ ‏(وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاة)، سورة المائدة، جزء من الآية 91.‏ ভাবার্থের অনুবাদ: “আর অবশ্যই অবশ্যই শয়তান আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ থেকে ‎বিরত রাখতে চায়”। (সূরা আল মায়েদা, আয়াত নং ৯১ এর অংশবিশেষ)। ‎
٣
৩। অর্থ অপচয় ও এবং ধন সম্পদ নষ্ট করা: সুতরাং জুয়া খেলার কারণে কত ধনী ‎লোক দরিদ্র ও নিঃস্ব হয়েছে। ‎
٤
জুয়া খেলার প্রতি আসক্ত হওয়া: জুয়া খেলায় বিজয়ী ব্যক্তি আরও বেশি লাভের আশায় ‎খুব বেশি জুয়া খেলায় মুগ্ধ হয় এবং পরাজিত ব্যক্তি যা হারিয়েছে তা পুনরুদ্ধার করার ‎জন্য খুব বেশি জুয়া খেলায় মগ্ন ও আসক্ত হয়।
٥
পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা: খুব বেশি জুয়া খেলায় মগ্ন ও আসক্ত ব্যক্তি তার পরিবারের ‎বিষয়গুলিকে অবহেলা করে আর তার অর্থ হারানোর ফলে তার আর্থিক ও মানসিক ‎সমস্যা ও বিপদ কঠিন হয়ে পড়ে। আর অবশেষে তার পরিবার লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় এবং ‎সে তার নিজের স্ত্রীকে তালাক দিয়ে সে নিজেও ধ্বংস হয়ে যায়। ‎

জুয়া খেলার বিভাগসমূহ

১। জুয়া খেলার প্রথম বিভাগ হলো এই যে, সেই খেলাতে জয়ী ব্যক্তি পরাজিত ‎ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ বা অন্য কিছু উপার্জন করে থাকে, যেমন:- একদল লোক ‎তাস বা বালুট অথবা বেলুট খেলা করে। আর তাদের মধ্যে থেকে সবাই নির্দিষ্ট ‎পরিমাণে অর্থ জমা রাখে। আর সেই খেলাতে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জয়ী হবে, সে ‎ব্যক্তি উল্লিখিত সমস্ত অর্থ নিয়ে নিবে। ‎

২। কোনো একটি দল বা কোনো একটি খেলোয়াড়ের জয়ের উপরে বাজি ধরা বা বাজি ‎রাখা অথবা পণ রাখা, যেমন:- কতকগুলো লোক কিছু অর্থ বা কিছু জিনিস পণ ‎রাখলো। এবং তাদের প্রত্যেকেই তার দল বা খেলোয়াড়ের জয়ের উপরে এই বলে ‎বাজি ধরলো যে, তার দলই বা তার খেলোয়াড়ই জিতবে। অতএব তার দল বা তার ‎খেলোয়াড় যদি জয়ী হয়, তাহলে সেও জয়ী হবে, আর যদি তার দল বা তার ‎খেলোয়াড় পরাজিত হয়, তাহলে সেও পরাজিত হবে। ‎

৩। লটারি এবং ভাগ্যপরীক্ষার টিকিট, যেমন:- কোনো ব্যক্তি ডলার দিয়ে টিকিট ক্রয় ‎করে এবং কতকগুলো টিকিটে লটারি করা হয়। সেই লটারিতে তার টিকিট জয়ী হলে, ‎সে তার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি ডলার পাবে অথবা কম ডলার পাবে। ‎

৪। টেলিফোনের মাধ্যমে বা মোবাইলের ম্যাসেজের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ‎করা। আর এই ক্ষেত্রে টেলিফোনের বা মোবাইলের স্বাভাবিক খরচের চেয়ে অনেক ‎বেশি খরচ হয়ে থাকে। তদ্রূপ সমস্ত প্রকারের গতিশীল, বৈদ্যুতিক এবং ইলেকট্রনিক ‎খেলায় বা ইন্টারনেটের ওয়েবসাইটের বিভিন্ন প্রকারের খেলায় অংশগ্রহণ করাও হলো ‎জুয়া খেলার অর্ন্ভুক্ত বিষয়। এই সমস্ত খেলার মাধ্যমে খেলোয়াড় জয়ী হয়ে অর্থ অর্জন ‎করতে পারে অথবা পরাজিত হয়ে অর্থ হারতে পারে। ‎

আপনি পাঠ্য বিষয়টি সফলভাবে শেষ করেছেন।


পরীক্ষা শুরু করুন